০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাতারের রেফারি বাংলাদেশের শিয়াকত

-

রক্তে তার খেলাধুলা। ক্রীড়ার প্রতি এই ভালোবাসাই পাল্টে দিয়েছে শিয়াকত আলীর জীবন। সাধারণ একজন শ্রমিকের বদলে তিনি এখন মাঠের সম্মানিত ব্যক্তি। দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন কাতারের ফুটবল মাঠসহ অন্য আরব দেশ। কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে অবশ্য শিয়াকতকে সবাই চেনে বাঙালি কুরা হাকাম মোহাম্মদ শেখ আলী নামে। কুরা অর্থ ফুটবল, হাকাম অর্থ রেফারি। এই পরিচয়েই তিনি পরিচালনা করেছেন দুই হাজারের মতো ম্যাচ। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেড়শটি। গতকাল তিনি দেখা করতে আসেন মাঠে খেলা শেষ করেই।
স্কুল পর্যায়ে অ্যাথলেট এবং ভালো সাঁতারু ছিলেন। এরপর ২০১৩ সালে জীবিকার সন্ধানে কাতারে আসেন। কয়েক মাস বসে থাকার পর স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার একটি ফুটবল প্রজেক্টের জন্য স্কুলে স্কুলে গিয়ে খেলোয়াড় সংগ্রহের কাজ করেন। কাতারের বার্সেলোনা প্রজেক্টের সিইও এর কাছে বলেছি, ‘বাংলাদেশে স্কুলে ক্রীড়া শিক্ষক ছিলাম। রেফারিংও করেছি।’ আমার কথা শুনে সেই সিইও সম্মতি দেন কাজের সুযোগের। তখন খেলোয়াড় সংগ্রহের পাশাপাশি খেলাও পরিচালনা করেন।
প্রজেক্ট শেষে কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে কাজ পান। এরপর শিয়াকতের নামের যেমন পরিবর্তন, তেমনি জীবনের চাকাও। কাতারের প্রথম শ্রেণীর রেফারি তিনি। দেশটির সেনাবাহিনী স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্যানেল রেফারি সাত বছর ধরে। নিজেই দিলেন তথ্য, ফুটবল রেফারিং করে বেশ ভালোই অর্থ পাচ্ছি আমি। প্রতি মাসে প্রায় আড়াই হাজার ডলার পাই খেলা চালিয়ে।’
এই দেশে রেফারিদের ম্যাচপ্রতি সর্বনি¤œ পারিশ্রমিক দুই শত ডলার। আর সর্বোচ্চ এক হাজার ডলার। রেফারি উন্নয়নে কাতারের বাজেট সাত শত কোটি টাকা। তাদের ফিফা ও পেশাদারি রেফারি ১২০ জন। শিয়াকত অপেক্ষায় আছেন ফিফা রেফারি হওয়ার। জানালেন, ‘কাতার ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমিই একমাত্র রেফারি।’ রেফারিং করতে জর্দান ও কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইন সফর করেছেন। কাতারে সারা বছর ছোট বড় মিলে ৪২টি লিগ চলে। কাতার লিগ ও টুর্নামেন্ট মিলে এ পর্যন্ত ২০টি ফাইনাল ম্যাচে সহকারী রেফারি ছিলেন শিয়াকত। এখন তার ইচ্ছে দুই বছর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে রেফারিং করার। কাতারে দশ বছর রেফারিং করলে সে সুযোগ মেলে। শিয়াকত চাইলে বাংলাদেশী হিসেবেই ফিফা রেফারি হতে পারেন। বিষয়টি অবশ্য তিনি ছেড়ে দিয়েছেন বাফুফের রেফারিজ বোর্ডের ওরপই। ‘বাংলাদেশ যদি আমাকে চায় ফিফা রেফারি করতে তাহলে দেশের প্রয়োজনে আমি সম্মত আছি।’


আরো সংবাদ



premium cement