২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২৬তম টেস্টে লিটনের সেঞ্চুরি

দু’জনের বিপর্যয় ঠেকানো জুটি। লিটন দাসের শতরান উদযাপনের মুহূর্তকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ফিফটি করা মুশফিকুর রহীম: এএফপি -

বছরটা লিটন দাসের জন্য ভালো-মন্দ মিশেলে। দেখিয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্স। সবচেয়ে বাজে বছরও এটিই! সাদা পোশাকে এবার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ চূড়ায় পা রেখেছেন। আবার রঙিন পোশাকে আছড়ে পড়েছেন। টি-২০ বিশ্বকাপ ও এর আগে দেশের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে তিনি নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন। সব মিলিয়ে এ বছর ১৬ টি-২০ ইনিংসে তার গড় ১৩, স্ট্রাইক রেট ৯৫.৪১। ছয় বছরের টি-২০ ক্যারিয়ারে এতটা বাজে বছর তার আসেনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে দলে জায়গাই পাননি। বিশ্বকাপে ব্যর্থতায় সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন। তবে ফরম্যাট বদলানোর সাথে সাথে বদলে গেল লিটনের ফর্মও। সেই লিটন গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে করলেন সেঞ্চুরি। তাতে একটা রেকর্ডেরও ভাগীদার হন লিটন। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলে তিনি সেঞ্চুরি পেলেন। ২৬তম টেস্টে তিন অঙ্কে পৌঁছে তিনি পাশে বসেছেন খালেদ মাসুদ পাইলটের।
২০১৫ সালে টেস্ট অভিষেকের পর এর আগে দুইবার নব্বইয়ের ঘরে আউট হয়েছিলেন তিনি। জানুয়ারি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে ৯ ইনিংসে চারটি পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস ছিল তার। সেঞ্চুরিটাই কেবল পাচ্ছিলেন না। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্টে শতকের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৯৫ রানে থামে তার ইনিংসটি। দুবারই ক্যাচ আউট হয়েছেন ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে। ২০১৮ সালে শীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৪ রানে আউট হন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে, বিশেষ করে টি-২০তে খুব ভালো করতে পারছিলেন না। বিশ্বকাপে মাত্র একটি ইনিংসে বলার মতো সংগ্রহ তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তবে টেস্টে নিজের ফর্মটা ধরে রাখলেন।
মাঠে নেমেছিলেন দলের বিপর্যয়কর অবস্থাতেই। মুশফিকুর রহীমের সাথে গড়েছেন ২০৪ রানের জুটি। নিজের শতরানটি অবশ্য এসেছে বেশ ঝুঁকি নিয়েই। নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছেই কিছুটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছিলেন। ৭৮তম ওভারের তৃতীয় বলে নোমান আলীর অফ স্টাম্পের বাইরে ফুলার লেংথের বলটি মিড অফে ঠেলে দিয়েই ছুটলেন রানের জন্য। শাহিন শাহ আফ্রিদি বল ধরেই ছুড়ে মেরেছিলেন নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে। একটু এদিক-ওদিক হলেই রান আউট হতে পারতেন। কিন্তু এ যাত্রায় ভাগ্য তার সাথেই ছিল।
দিন শেষে লিটনের সংগ্রহ ১১৩। ২২৫ বলে ১১টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে তার সঙ্গী মুশফিকুর রহীম অপরাজিত আছেন ১৯০ বলে ৮২ রান করে। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৩।
হাবিবুল বাশার সুমন ম্যাচের আগের দিন বলেছিলেন, ‘টি-২০তে সে মনে হয় বাড়তি চাপ নেয় রান করার। অথচ ওকে কখনোই চাপ দেয়া হয় না। তবে আমার মনে হয় না টেস্টে সেটির প্রভাব পড়বে। এবার সে ভালো করবে।’
অধিনায়ক মুমিনুল হকও শুনিয়েছিলেন আশার কথা, ‘খারাপ সময়ের চক্করে লিটনের আত্মবিশ্বাস একদমই শূন্যতে থাকার কথা। তাকে জাগিয়ে তোলার বড় দায়িত্ব টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের। তবে লিটন নিজেই তা সামলে নিয়েছেন।’


আরো সংবাদ



premium cement