০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


  গোলাপগঞ্জের ৮ দফতরে কী মধু পেয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

১০ বছরের বেশি একই কর্মস্থলে
-

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আট দফতরের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা অনেক বছর পার করছেন একই কর্মস্থলে। তাদের কেউ আছেন এক যুগ ধরে আবার কেউ আছেন দেড় যুগ বা তারও বেশি সময় ধরে। দীর্ঘ দিন একই কর্মস্থলে থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।
উপজেলা পরিষদের সমবায়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, পরিসংখ্যান, মাধ্যমিক শিক্ষা, মহিলাবিষয়ক কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, নির্বাচন অফিস ও সমাজসেবা কার্যালয় বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এসব বিভাগ ও দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্যত্র বদলি হতে একেবারে নারাজ। মাঝে মধ্যে তাদের কেউ বদলি হলেও ফের চলে আসছেন আগের জায়গায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ায় ওই আট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বদলি বা পদোন্নতি নিতে নারাজ। দীর্ঘ দিন ধরে একই কর্মস্থলে থাকার কারণে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। জানা যায়, উপজেলা পরিষদের সমবায় কর্মকর্তা জামাল মিয়া এখানে প্রায় ১০ বছর পার করেছেন। মাঝে তাকে অন্য কর্মস্থলে বদলি করা হয়েছে দু’বার। তিনি এক-দুই মাস পর ফের একই কর্মস্থলে ফিরে আসেন। ২০১০ সালের মে মাস থেকে একই বছরের ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ছয় মাস অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করেন তিনি। পরে ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর এ দফতরের নিয়মিত দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জালাল মিয়া ২০১৪ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত প্রায় চার বছর কর্মস্থলে কর্মরত ছিলেন। পরে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। একই বছরের ৪ মে তিনি ফের তদবির করে ফিরে আসেন গোলাপগঞ্জের আগের কর্মস্থলে। একই বছরের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মরত থাকার পর তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। পরে তিনি একই বছরের ২০ নভেম্বর ফের সমবায় কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন।
উপজেলার সেবা গ্রহীতাদের দাবি, উপজেলায় দীর্ঘ দিন ধরে যারা কর্মরত আছেন তাদের আধিপত্যে সেবা গ্রহীতারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ন্যূনতম যে সেবাটুকু পাওয়া দরকার আর্থিক সুবিধা না দিলে সে সেবাটুকুও মিলছে না। তাদের অন্যত্র বদলির মাধ্যমে উপজেলায় জনসেবা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সূত্র জানায়, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ লুঠন ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর গোলাপগঞ্জে যোগদান করে এখন পর্যন্ত কর্মরত আছেন। তার গোলাপগঞ্জে যোগদানের বয়স এক যুগেরও বেশি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অভিজিৎ পাল ২০১১ সালের ২২ মার্চ যোগদান করে অদ্যাবধি এখানে রয়েছেন। পরিসংখ্যান অফিসার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম ২০১০ সালে ১ জানুয়ারি যোগদান করে এখনো পর্যন্ত কর্মরত রয়েছেন। মহিলাবিয়য়ক কর্মকর্তা খাদিজা খাতুন ২০১৩ সালের ১৬ মে যোগদান করেছেন। এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ার খুরশেদ আলম ২০০৩ সাল থেকে টানা ১৭ বছর একই কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বদলি করা হয়। বদলির দুই মাস যেতে না যেতেই আবার তিনি গোলাপগঞ্জের সাবেক কর্মস্থলে ফিরে আসেন। মহিলাবিষয়ক কার্যালয়ের প্রশিক্ষক দিপালী রানী তালুকদার ২০০৭ সালে যোগদান করে এখনো পর্যন্ত কর্মরত রয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক খসরু মিয়া প্রায় ১৮ বছর ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী সম্পা রানী পাল ও আছমা বেগম এবং একই দফতরের কারিগরি প্রশিক্ষক সোহেলী বেগম ২০০৭ সাল থেকে কর্মরত আছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement