২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অবসরের সঙ্গী হোক বই

-

একটি ভালো বই যেন শতাব্দীর সেরা মানুষদের সাথে কথা বলা। ফরাসি দার্শনিক দেকার্তের এই কথাটা শতভাগ সত্য। কারণ বই পড়ার মাধ্যমে আমরা শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সভ্যতা, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, সমাজনীতি, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারি।
দেখা যায়, সময় কাটানোর জন্য আমরা প্রায়শই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুঁদ হয়ে পড়ে থাকি। এক নাগাড়ে স্ক্রল আর অযথা চ্যাটিং করে মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট করে ফেলি অথচ এই মুহূর্তগুলো আমরা বই পড়ার মাধ্যমে আরো রঙিন করে তুলতে পারি।
অবসরে সময় কাটানোর উত্তম উপায় হলো বই পড়া। বর্তমান সারাবিশ্ব করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত, বিশ্বের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। চলছে অনলাইনে পাঠদান। তাই ক্লাস করার পাশাপাশি অবসর সময়ে আমরা বই পড়ে আমাদের মুহূর্তগুলোকে আরো মধুর করে তুলতে পারি। এতে করে আমাদের জ্ঞানের প্রশস্ততা বাড়বে, চিন্তাচেতনার দ্বার উন্মুক্ত হবে, অজানাকে জানার আগ্রহ তৈরি হবে। সঠিক পথের দিশা পেতে বইয়ের চেয়ে ভালো কোনো মাধ্যম হতে পারে না। লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ‘এলিট ডেইলি’ বইপড়ুয়াদের নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছে। তাদের ভাষ্য মতে, ‘বইপড়া শুধু সময় পার করার উপলক্ষই নয় বরং এতে আনুষঙ্গিক আরো অনেক দিকের উন্নতি সাধিত হয়।’
একটি ভালো বই নিকষ কালো আঁধার রাতেও আলো জ্বালাতে পারে, জ্বলে- পুড়ে মরে যাওয়া মনকেও নতুন করে সজীব আর প্রাণবন্ত করে তোলে, পাঠককে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে তার মানসপটে সুন্দর সুন্দর ভাবনার খোরাক জোগায়।
ভালো খাদ্যবস্তুতে আমাদের পেট ভরে ঠিকই কিন্তু একটি ভালো বই আমাদের আত্মাকে পরিতৃপ্ত করে।
বইয়ের সাথে বন্ধুত্ব কমে গেলে আমাদের জ্ঞানার্জনেও ভাটা পড়বে।
সব কিছু শেষ হয়ে গেলেও বইয়ের আবেদন যেন মানুষের মধ্য যুগ যুগ ধরে বেড়েই চলছে।
বইয়ের গুরুত্ব ও অবদান নিয়ে কালে কালে মনীষীগণ অনেক কিছু বলে গেছেন।
ইরানের বিখ্যাত কবি ওমর খৈয়ামের কথাটি আমাদের সবারই জানা, ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, তবু একখানা ভালো বই অনন্ত যৌবনা।’
তাঁর কাছে বই এতটাই প্রিয় বস্তু ছিল যে তিনি স্বর্গে গেলেও সাথে বই নিয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেছেন। আর জন মেকলে তো বলেই দিয়েছেন, ‘গরিব হয়ে চিলেকোঠায় থাকব তবু এমন রাজা হতে চাই না যে বই পড়তে ভালোবাসে না।’
যারা বইপড়ুয়া তারা তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘নিজস্ব গ্রন্থাগার’ বা ‘ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা’ গড়ে তোলে। অবসর সময়ে শেলফ থেকে পছন্দের বইটি নিয়ে তারা ডুব দেয় স্মৃতির অতল গহ্বরে, পাড়ি জমায় জ্ঞানের মহাসমুদ্রে।
মূলত বই হলো অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে এক বিরাট সেতু বন্ধন। বইয়ের মাধ্যমে অতীতকে আমরা বর্তমানের ফ্রেমে বন্দী করতে পারি, অতীত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারি। তবে শ্রেণীকক্ষের পাঠ্য আর অবসর সময়ে বই পড়া কিন্তু এক জিনিস নয়। পাঠ্যবই যেটা আপনার ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক পড়তেই হয় আর অবসর সময়ে বই পড়া হলো আপনার পছন্দ অনুযায়ী বই পড়ে জ্ঞানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করা, আনন্দের সাথে কিছু মুহূর্তকে আরো মোহনীয় করে তোলা। তাই আমরা অবসর সময়টুকু বই পড়ার মাধ্যমে পার করতে পারি, শিখতে পারি নতুন কিছু, বইয়ের ভেতরে থাকা সাহিত্য রসাস্বাদন করে কৌতূহলী মনের ভাবনাকে গভীর থেকে আরো গভীরে নিয়ে যেতে পারি। সর্বোপরি বই হোক আমাদের অবসরের একমাত্র সঙ্গী।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন : বিচার কোন পর্যায়ে? মৌলভীবাজারে কালবৈশাখীর তাণ্ডব, খোলা আকাশের নিচে অনেক পরিবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা : জবিতে মোট উপস্থিতি ৮৩ শতাংশ ব্যস্ত শহর বগুড়া ফাঁকা : বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় অব্যাহত ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ জনপদে পরিণত করবো : ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হিট স্ট্রোকে পর্যটকের মৃত্যু জামালপুরে বউ-শাশুড়ি দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ২ ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা ৪১.৫ ডিগ্রি, বেঁকে যাচ্ছে রেলপথ আটক জাহাজের ক্রুদের ছেড়ে দেবে ইরান ফতুল্লা ৮৩০ গার্মেন্টেস শ্রমিক বিরুদ্ধে মামলা শ্রীনগরে ২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ

সকল