২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হ্যান্ডবলে পদক চায় বিশেষ শিশুরা

-

স্পেশাল অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছে পুরুষ ও মহিলা হ্যান্ডবল দল। বিশেষ শিশুরা এর আগে অন্যান্য ডিসিপ্লিনে খেললেও কখনো খেলেনি হ্যান্ডবল। মাত্র কয়েক মাসের প্রস্তুতিতেই তাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। আগামী ১৪-২১ মার্চ আবুধাবিতে হতে যাওয়া স্পেশাল অলিম্পিক ওয়ার্ল্ড সামার গেমসে হ্যান্ডবলে পদক জিততে চায় তারা। সুস্থ মনমানসিকতা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে বেড়ে ওঠা সবল খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বর্ণপদকের কথা ভাবতে না পারলেও বিশেষ খেলোয়াড়রা ঠিকই আশায় বুক বেঁধেছে।
আর তাদের মাঝে এই আত্মবিশ্বাস তৈরি করে যাচ্ছেন পুরুষ বিভাগে প্রধান কোচ খায়রুজ্জামান, সহকারী কোচ অলোক বকসী ও মোবারক হোসেন। মহিলা বিভাগে প্রধান কোচ ডালিয়া আক্তার, সহকারী কোচ মুন্নী দাস ও শামিমা নাসরিন লাকি।
জাতীয় হ্যান্ডবল দলের অধিনায়ক ও ২০১৬ সালে কোচেস ট্রেনিং করা খায়রুজ্জামান জানালেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুরা এর আগে অন্যান্য ইভেন্ট খেললেও এবারই প্রথম গঠন করা হয়েছে হ্যান্ডবল দল। আর এই দলটিই যাচ্ছে বিশেষ অলিম্পিকে।’
দল গড়ার প্রক্রিয়া নিয়ে খায়রুজ্জামান ও ডালিয়া আক্তার বলেন, ‘গত বছর ১০ জুলাই আমরা বিশেষ স্কুলগুলোর কয়েকজন শিক্ষককে হ্যান্ডবল প্রশিক্ষণ দেয়ার পর তারা তাদের ভাষায় (সাংকেতিক) বিশেষ ছাত্রছাত্রীদের ট্রেনিং দেন। মাস দুয়েক পর দুই সপ্তাহের ক্যাম্প করে সেখান থেকে ১২ জন করে বাছাই করি। চলতি বছর জানুয়ারিতে সেখান থেকে ১০ জন করে ২০ জনকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ক্যাম্প শুরু হয়।’
ট্রেনিং নিয়ে খায়রুজ্জামান ও ডালিয়া আরো বলেন, ‘যেহেতু এবারই প্রথম স্পেশাল অলিম্পিকে হ্যান্ডবল যাচ্ছে সেহেতু ইন্টারনেটে বিদেশীদের সম্বন্ধে যতটুকু জানতে পারছি, ততটুকুই শিখাতে পারছি। এখন পর্যন্ত ওদের সাথে ঢাকা ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, পুলিশ দল, ঢাকা জেলা দলের সাথে ম্যাচ খেলিয়েছি। এতে তাদের ম্যাচ টেম্পারমেন্ট বেড়েছে বলেই স্বপ্ন দেখছে বিদেশে গিয়েও পদক জেতার। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।’
নিজের অনুভূতি বর্ণনা করতে গিয়ে ডালিয়া বলেন, ‘এসব বিশেষ শিশুদের জন্য কিছু করা আমাদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্বের মাঝে পড়ে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ও ফেডারেশনকে ধন্যবাদ যে, আমি তাদের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের সবকিছু ঠিক থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে মনে হতো অসুখী। ওদের সাথে কাজ করার পর মনে হয়েছে আল্লাহ আমাদের কত সুখে রেখেছেন। প্রতি পদে পদে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে পদকপ্রাপ্তি নিয়ে ভাবি না। ওরা ভালো থাকুক, খেলাটাকে উপভোগ করুকÑ এটাই চাই। আর পদক পেলে তা হবে সোনায় সোহাগা এবং পরবর্তীর জন্য প্রেরণা।’
পুরুষ দলের খেলোয়াড় জুনায়েদ দোভাষীর মাধ্যমে জানান, ‘আমরা বিদেশ গিয়ে ভালো করব। হ্যান্ডবল মজার খেলা। আরো আগে থেকে কেন যে খেললাম না। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলাও প্রয়োজন রয়েছে।’
মহিলা দলের খেলোয়াড় মীম পড়ছেন মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণীতে। হ্যান্ডবল খেলে তার বিশ্বাস জন্মেছে স্পেশাল অলিম্পিকে পদক জিততে পারবেন তিনি, ‘হ্যান্ডবল খেলছি এবং বিদেশ যাবো বলে আব্বু আম্মুও খুশি। পদক জিতে তাদের মুখে আরো হাসি ফুটাতে চাই। বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে চাই।

 


আরো সংবাদ



premium cement