০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`


অন্ধ হলেও শিকারে পটু শুশুক

-

তোমরা কখনো শুশুক দেখেছ? শুশুকের আরেক নাম শিশু। কয়েক যুগ আগেও বুড়িগঙ্গা নদীতে অহরহ দেখা যেত শুশুক। বর্তমানে এটি এ নদীতে আছে কিনা সন্দেহ।
কিছুক্ষণ পর পর শুশুক মাথা তোলে নদীর বুকে। কখনো আংশিক দেখা যায়, কখনো পুরো শরীর। আবার একটু পর পর ডুব দেয়। শুনলে অবাক হবে, এদের চোখের চিহ্ন থাকলেও তা দিয়ে দেখতে পারে না। অর্থাৎ অন্ধ। বাদুড় যেমন চলাফেরা করে তার চারপাশের শব্দতরঙ্গের প্রতিধ্বনি অনুভব করে। ঠিক তেমনি শুশুকও চলাচলে একই ধরনের কৌশল বা বুদ্ধি কাজে লাগায়।
পানির তলায় শুশুকের বসবাস। বাচ্চা প্রসবও একই জায়গায়। এমনকি এরা বাচ্চাকে স্তন্য দেয় পানির তলায়। সেখানেই এরা বড় হয়। বাচ্চাগুলো ঘোরে মায়ের সাথে সাথে। মাছের যেমন ফুলকা আছে, শুশুকের তেমনটি নেই। এখানেই এদের পার্থক্য। যে কারণে পানির ওপর এদের ঘন ঘন মাথা তুলতে হয় শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য। মাথা তুলে ফুসফুসের সব বাতাস বের করে। তখন ভূ-ও-ও-ও-স শব্দ করে। পানি ছিটে পিচকারির মতো।
শুশুকের দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও শ্রবণশক্তি প্রবল। তাই অনেক দূরের শব্দও এরা শুনতে পারে। নানা ধরনের মাছেরও শব্দ পায়। শুধু শব্দ শুনেই চিংড়ি, কার্প, শিং ইত্যাদি মাছ শিকার করে। তবে নদীর পানি ক্রমেই দূষিত হচ্ছে বলে মাছের পরিমাণ কমছে। তাতে খাদ্যসঙ্কটে পড়ছে শুশুকেরা। ফলে এদের সংখ্যাও কমছে।
শুশুকের ইংরেজি নাম গ্যানজেস রিভার ডলফিন। আর বৈজ্ঞানিক নাম প্লাটানিসটা গ্যানজেটিকা। এদের এখনো কমবেশি দেখা যায় নেপাল, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে। অপেক্ষাকৃত অল্প স্রোতস্থানে চলাচল বেশি। একসময় বাংলাদেশের পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, কর্ণফুলী ও সাঙ্গু নদীতে এদের প্রচুর দেখা মিলত। শুশুক দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ প্রায় ২১৫ সেন্টিমিটার। ওজন সর্বোচ্চ প্রায় ৯০ কেজি। এদের জীবনকাল ১৭ থেকে ২৩ বছর।


আরো সংবাদ



premium cement