দেশের নদনদীতে ঝুঁিকপূর্ণ নিষিদ্ধ নৌযান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এগুলোর কারণে একের পর এক ঘটছে নৌ দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। বড় বড় নদীতে যেসব নৌযান যাওয়ার কথা না সেখানেও ওগুলো নির্বিঘেœ চলছে। আর যাদের দায়িত্ব ওগুলো তদারকির; তারা নির্বিকার। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সম্প্রতি মেঘনায় যে নৌযানটি ডুবেছে তা ওই নদীতে চলাচলেরই কথা না।
গত ১৪ জানুয়ারির ঘটনা। রাত ৩টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় যাচ্ছিল একটি মাটিভর্তি ট্রলার। সেখানে ৩৪ জন শ্রমিকও ছিলেন। নৌযানটি গজারিয়া এলাকায় মেঘনায় অন্য একটি নৌযানের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে ১৪ জন শ্রমিক সাঁতরে কিনারে উঠতে সক্ষম হলেও অন্যরা এখনো নিখোঁজ। এর মধ্যে গতকাল একজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শাহ আলম নামের এক শ্রমিক বাদি হয়ে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শাহ আলম ওই ট্রলারেরই বেঁচে যাওয়া একজন শ্রমিক। তিনি অভিযোগে বেপরোয়া গতির কথা উল্লেখ করেছেন।
গজারিয়া থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেছেন, ঘটনা যা-ই ঘটুক মূল দোষ হচ্ছে ওই ট্রলারওয়ালার। সন্ধ্যা ৬টার পর এসব ট্রলার চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তিনি বলেন, এসব ট্রলার দিনেই দেখা যায় না। নদীতে যখন এসব ট্রলার চলে তখন দূর থেকে মনে হয় একটি সাপ চলছে। রাতে এগুলো দেখাই যায় না। এতে কোনো আলোর ব্যবস্থা নেই। বলা হচ্ছে তেলের ট্যাংকের সাথে ধাক্কা লেগেছে। যদি অন্য নৌযানটি তেলের ট্যাংকার হয় তবে ওটির চেয়ে ট্রলারটি কিছুই না। ট্রলারটি কাছ থেকেও দেখার কথা না ওয়েল ট্যাংকার চালকের। তার পরও ট্রলারটি উদ্ধার হলে বোঝা যাবে ট্যাংকারটি কোনো রঙ করেছে কি না? ওসি বলেন, ট্রলারগুলো নিষিদ্ধ হলেও রাতে এগুলো অবৈধভাবে চলাচল করে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেছেন, এসব নৌযান রাতে চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ২০১৩ সালের দিকে সরকারি আদেশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব নৌযান রাতে চলাচল করে। তিনি বলেন, এ ট্রলারের আদৌ কোনো কাগজপত্র রয়েছে কি না তাই নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, এরূপ ২০ হাজারের মতো নৌযান রয়েছে, যার কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এগুলো নদনদীতে চলাচল করছে। বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ও নৌপরিবহন অধিদফতরের ইন্সপেক্টরদের এগুলো তদারকি করার কথা। নৌপরিবহন অধিদফতরের লোকবল সঙ্কট রয়েছে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর কোনো সঙ্কট নেই। এগুলো দেখার জন্য বিআইডব্লিউটিএতে নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ নামের একটি শাখাই রয়েছে। তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন না বলেই এরূপ একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাতে মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে এভাবে শত শত নৌযান চলাচল করে। সাধারণত বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই তা সবার নজরে আসে। আর প্রতিদিন যে অসংখ্য ছোট ছোট ঘটনা ঘটছে তা কারো নজরেই আসে না। এসব নৌযানে কোন আলো পর্যন্ত নেই। একেবারে কাছে এলেও এগুলো দেখা যায় না। রাতে বাল্কহেডগুলোও চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু শত শত বাল্কহেড রাতে চলাচল করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা