১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫
`


আবারো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন

পাঁচ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে আজ

সারা দেশে দীর্ঘদিন পর গতকাল খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ ছিল শিক্ষার্থীরা। ছবিটি রাজধানীর ওয়ারী এলাকার : নয়া দিগন্ত -

গতকাল (রোববার) দুপুরে সিদ্ধান্ত ছিল তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিতে না পৌঁছলে স্কুল আর বন্ধ দেয়া হবে না। শিক্ষামন্ত্রীই এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। কিন্তু সন্ধ্যার পরেই আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আজ (সোমবার) দেশের পাঁচ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অধিদফতরের সাথে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ বন্ধ থাকবে। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেগুলোর কর্তৃপক্ষ চাইলে খোলা রাখতে পারবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই ছুটি আরো বাড়ানো হবে কি না তা আজ জানানো হবে।
যদিও অসনীয় গরমে ঈদের ছুটির পর আরো এক সপ্তাহ ছুটি বাড়িয়ে গতকাল (রোববার) থেকে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তীব্র গরমে অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এর পরও স্কুল টাইমিং এবং ক্লাসের সময় কমিয়ে নিয়ে আসায় শিক্ষার্থীরা গতকাল থেকে স্কুলে ফিরতে শুরু করেছে। ক্লাসের উপস্থিতিও ছিল ভালো। অনেক অভিভাবক আবার এমনটাও বলছেন আগামী এক-দু দিনের মধ্যে তাপমাত্রা না কমলে আবারো বন্ধ হয়ে যেতে পারে স্কুল কলেজ। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছিল দেশের সব জেলার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিতে না পৌঁছলে আপাতত স্কুল কলেজ বন্ধের কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই নতুন সিদ্ধান্ত দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে গতকাল শিক্ষামন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, শুধু ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বিবেচনা করে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। ঢাকা শহরের তাপমাত্রাই বাংলাদেশের তাপমাত্রা নয়। কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা যদি অসহনীয় পর্যায়ে যায়, তাহলে বিদ্যালয় সেখানে নিজস্ব পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু আমরা এমনো দেখছি, বিভাগীয় শহরে কিছু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্কুলও বন্ধ করে দিয়েছে অভিভাবকদের চাপে। এটা তো গ্রহণযোগ্য নয়।
তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০-এর পর্যায়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাংলাদেশে তো নতুন নয়। সুতরাং পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০-এর ওপরে যাওয়ার পূর্বাভাসের ওপর ভিত্তি করে সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া যুক্তিযুক্ত নয়।

স্কুল খোলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিভাবকরা আলোচনা-সমালোচনা করছেন জানিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, এই আলোচনা-সমালোচনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না। আমাদের শিক্ষার্থীদের শিখন ফল অর্জন করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কারিকুলামের কাজ চলছে। তাই জনপ্রিয়তার নিরিখে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, বাস্তবতার নিরিখে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিছু হলেই স্কুল বন্ধ করে দেয়ার এত আলোচনা কেন আসে? বাংলাদেশে কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নেই? এখন সবকিছু খোলা থাকবে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, এই প্রত্যাশা যথাযথ নয়।
অপর দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অতীতে একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। নতুন কারিকুলামের যে প্রক্রিয়া, সেখানে পুরো বছর শনিবার বন্ধ দেয়া উচিত কি না, সেটি নিয়ে আলোচনা আছে। যেহেতু ১০ দিন পাঠদান বন্ধ ছিল, তাই এই মুহূর্তে শনিবার স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পরে সেটি যদি প্রয়োজন না হয়, তাহলে অন্য সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
অবশ্য গরমের মাত্রা অতিরিক্ত হলে সেখানে নির্দেশনা হচ্ছে কোনো জেলায় যদি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা যায়, সেখানে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আছেন, তারা আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনা করে সেই জায়গার প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ ও পাঠদানের সময়ও পরিবর্তন করতে পারবেন।


আরো সংবাদ



premium cement