ভারতীয় পার্লামেন্টে লোকসভা নির্বাচনে আগে নেতাজিকে সামনে রেখেই গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মঞ্চ সাজাচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। সম্প্রতি আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বর্ষপূর্তিতে লালকেল্লা থেকে নেতাজীকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এতেই চটেছেন নিজেকে “রাজনৈতিক মুসলমান” এবং মমতা ব্যানার্জির সমর্থক দাবি করা বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন। কলকাতার একটি অনলাইন পোর্টালকে সুমন বলেন, “নেতাজিকে নিয়ে বিজেপি আরএসএস যা শুরু করেছে তাতে ওদের প্রতি ঘৃণা হয় আমার।”
পাশাপাশি সুমন আরো বলেন, “দেখুন ওরা সুভাষচন্দ্র বোসের আদর্শ থেকে শতহস্ত দূরে। শ্যামাপ্রসাদকে চরম অপছন্দ করতেন নেতাজি। ১৯৪৫ সালে আরএসএসের পত্রিকাতে একটা কার্টুন বেরিয়েছিল। যেখানে মহাত্মা গান্ধীকে দশমাথাওয়ালা রাবণ দেখানো হয়েছিল। সেই কার্টুনের দশমাথার মধ্যে একটি মাথা সুভাষচন্দ্র বোসের প্রতীকী ছিল। এই কার্টুন রাবণের সামনে আরও দুটি কার্টুনে তীর-ধনুক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল (আমি কিন্তু ছিলেন বলছি না) শ্যামাপ্রসাদ আর দালাল সাভারকর। আর আজ এরা নেতাজীকে শ্রদ্ধা জানানোর নাটক করছে।”
আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বর্ষপূর্তি এবং অখণ্ড ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু – এই দুটি বিষয়ই আপাতত ভারতীয় জনতা পার্টির রাজনৈতিক ইস্যু। লোকসভা ভোটমুখী ভারতে ২১ অক্টোবর, রোববার লালকেল্লা থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন – অখণ্ড ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতাজির নামই সারা দেশে উচ্চারিত হোক। গান্ধী-নেহরু পরিবারের অস্বস্তিকে উপেক্ষা করে ভারতের আম জনতা জানুক নেতাজির বীরগাঁথা। অখণ্ড ভারতের প্রথম সরকার – আজাদ হিন্দ সরকারের কাহিনী প্রচারিত হোক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই মাস্টার স্ট্রোকে এক ঢিলে দুই পাখি পারলেন মোদি-শাহ জুটি। মমতা ব্যানার্জিকে তৃণমূল শিবির “প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে তুলে ধরছিল। এই প্রচারের ফলে তা যেমন মার খেল, সঙ্গে নিজেদের বাঙালিদরদি হিসেবেও তুলে ধরতে পারল গেরুয়াশিবির।
কিন্তু এসবকে পাত্তা দিতে নারাজ গায়ক কবীর সুমনের বক্তব্য, “দেখুন ২০১৯-এ বিজেপি আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এটা ওরা বুঝে গেছে। তাই কংগ্রেস নেতাজির সঙ্গে যা যা অন্যায় করেছে তা তুলে ধরে পিঠ বাঁচাতে চাইছে। কিন্তু মানুষ ওদের বিশ্বাস করে না। বিজেপি-আরএসএস আজ পর্যন্ত ভারতে যা যা কর্মসূচী নিয়েছে সবেতেই ব্যর্থ হয়েছে। এটাতেও হবে।”
তবে শুধু নেতাজি ইস্যুতেই নয়, দাড়িভিটের ছাত্রহত্যা সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপির প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন সুমন। দাড়িভিট নিয়ে তিনি বলেন, ” এই যে ধরুন ইসলামপুরে ছাত্র মারা গেল। এর গায়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির রঙ চড়িয়ে পুজোর আগে দাঙ্গা লাগাতে চেয়েছিল বিজেপি। ভারতের সাধারণ শান্তিপ্রিয় সংখ্যালঘু মুসলিমরা বিজেপির এই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। মৌলবীরা বারবার করে মসজিদ থেকে ঘোষণা করে সাধারণ মুসলিম সমাজকে হিংসা থেকে দূরে রেখেছেন।”
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা