২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রাজশাহীতে করোনায় মৃত দুই ব্যক্তিকে ফেলে পালালেন স্বজনরা

-

রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির লাশ ফেলে পালিয়েছেন তার ভাই ও ভাবী। মৃত ব্যক্তির নাম আজাদ আলী (৩০)। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত দেড়টার দিকে মারা গেছেন তিনি। তার বাড়ি নওগাঁর পতœীতলা উপজেলার জামগ্রামে। হাবিবুর রহমান নামে আরো একজনের লাশ রামেকের ২৯নং ওয়ার্ডে ফেলে পালিয়ে যান তার স্বজনরা। তবে তিনি করোনা নেগেটিভ ছিলেন।
জানা যায়, আজাদ আলীর করোনা পজিটিভ ছিল। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন থাকায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। হাসপাতালে ছিলেন তার বড় ভাই ও ভাবী। তবে মৃত্যুর পর তারা দু’জনই মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে যান। তারা লাশ নিতে চাননি।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন সাংবাদিকদের জানিয়েছে, আজাদ আলীর মৃত্যুর পরই তার লাশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের জন্য রামেকের পক্ষ থেকে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে অবহিত করা হয়। এরপর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা আজাদ আলীর ভাই ও ভাবীর সাথে কথা বলেন। তারা স্বেচ্ছাসেবকদের জানান, গ্রামে এই লাশ দাফন করতে দেয়া হবে না। কোয়ান্টাম যেন রাজশাহীতেই লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করে। সে অনুযায়ী কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবকরা ভোর ৫টায় রাজশাহীতে কবর খনন শুরু করেন। এরপর ভোর ৬টায় আইসিইউর সামনে গিয়ে দেখেন মৃত ব্যক্তির ভাই ও ভাবী সেখানে নেই। অন্য রোগীর স্বজনরা জানান, ফজরের আযানের পর তারা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। এর পর থেকে তাদের ফোন বন্ধ।
কোয়ান্টাম আরো জানায়, সকাল ১০টা পর্যন্ত তাদের মোবাইল নম্বর দু’টি বন্ধই পাওয়া যায়। এরপর একটি নাম্বারে সংযোগ পাওয়া যায়। তখন জানানো হয়, তারা লাশ নেবেন না।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা: সাইফুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, স্বজনরা লাশ নেবেন না। আমরা বেওয়ারিশ হিসেবে পুলিশকে লাশ বুঝিয়ে দেবো। পুলিশ তা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে বুঝিয়ে দেবে। এরপর লাশ দাফন হবে বলে জানান তিনি।
এ দিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া হাবিবুর রহমান নামে আরো একজনের লাশ ফেলে স্বজনরা পালিয়ে যান। হাবিবুর রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মোয়াজ আলীর ছেলে। করোনার উপসর্গ নিয়ে রামেক হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ১০টার দিকে হাবিবুর রহমানের মৃত্যু হয়। করোনার সন্দেহভাজন রোগীদের এই ওয়ার্ডে রাখা হয়। তবে হাবিবুর রহমানের নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এসেছে। তারপরও স্বজনরা লাশ ফেলে পালিয়েছেন।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা: সাইফুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাবিবুর রহমানের সাথে তার স্বজনরা ছিলেন। তবে মৃত্যুর পর তারা লাশ ফেলে চলে গেছেন। তবে হাবিবুরের করোনা নেগেটিভ ছিল। তার লাশের ব্যাপারে পুুলিশকে জানানো হয়েছে। স্বজনরা লাশ না নিলে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করবে বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement