করোনা পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীলতার সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাবধানতা অবলম্বন এবং আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে দোয়া করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে গতকাল বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের খুতবায়।
ভারপ্রাপ্ত খতিব সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান খুতবায় মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, এখন আমরা অনেক দুঃখকষ্টের মধ্য দিয়ে সময় পার করছি। আজকে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত। এ অবস্থায় করণীয় হচ্ছে আমাদের সচেতন হওয়া এবং আরো দায়িত্বশীলতার সাথে সাবধানতা অবলম্বন করা। উদাসীন অস্থির হলে চলবে না। অনেক বেশি সবরের সাথে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। অনেক বেশি আন্তরিকতা নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। দোয়া করেই ফলাফলের জন্য অস্থির হওয়া যাবে না।
স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বনকে ইসলামের বিধান আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, যখন যে পরিস্থিতি সেভাবে সচেতন হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যতক্ষণ না আল্লাহ এ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করেনÑ এই সতর্কতা অবলম্বন করে যেতে হবে।
খুতবায় তিনি বলেন, দোয়ার সময় এটাই মনে করতে হবে, আমার আর কোনো জায়গা নেই। আশ্রয়ের জায়গা একটাই। তার কাছেই সব চাইতে হবে। নবী-রাসূলগণ যখনই কোনো সমস্যায় পড়েছেন, কষ্টে পড়েছেন আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে দোয়া করেছেন। কুরআনে এমন অনেকগুলো বর্ণনা এসেছে। হজরত আদম আ: ও হাওয়া আ:-এর দোয়া কবুল করে তাদের ক্ষমা করে দিয়ে মুক্ত করে দিয়েছেন। হজরত ইউসুফ আ: অসুস্থতায় পড়ে দোয়া করায় সুস্থ করে আগের অবস্থা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। হজরত ইউনুস আ: মাছের পেটের অন্ধকারে বিপদগ্রস্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে নিজের ওপর নিজে অন্যায় করেছেন স্বীকৃতি দিয়ে বললেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্তি কুন্তু মিনাজ জুয়ালেমিন।’ আল্লাহর পছন্দ হলো এ দোয়া। তিনি কবুল করে তাকে উদ্ধার করেন।
মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, কুরআনের বার্তা থেকে বোঝা যায়, বিপদ যত বড়ই হোক না কেন, অন্ধকার যতই ঘনীভূত হোক না কেন, দোয়া করলে আল্লাহ সব দূর করে দেন, রোগ থেকে মুক্ত করে দেন। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা খাঁটি মনে ডাকতে পারো, আমি সাড়া দেবো। বলেছেন, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। পাপ যত বড়ই হোক, আল্লাহর রহমত অনেক প্রসারিত। নিজের পাপের দিকে নয়, আল্লাহর রহমতের দিকে তাকিয়েই আমরা তাকে ডাকব। আল্লাহর কাছে আমাদের ত্রুটির কথা স্বীকার করব। আল্লাহকে আমরা ডাকতেই থাকব। তাই সবর করতে হবে, আল্লাহর কাছে চাইতে হবে এবং ইস্তিগফার করতে হবে। হাদিসে এসেছে সব সময় ইস্তিগফার পড়লে আল্লাহ সঙ্কট থেকে বের হওয়ার পথ বের করে দেবেন। পেরেশানি থেকে মুক্তি দেবেন এবং এমন উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন, যা সে কোনো দিন চিন্তাও করেনি।
ভারপ্রাপ্ত খতিব বলেন, দোয়া করে তাড়াহুড়ো করাটা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়। হাদিসের অনুযায়ী আল্লাহ কিছু দোয়ার ফল তাৎক্ষণিক দিয়ে দেন। কিছু দোয়ার ফল বান্দার আখিরাতের জীবনের জন্য রেখে দেন। আর কিছু দোয়ার ক্ষেত্রে বান্দার গুনাহ মাফ করেন দেন। বান্দার কোনো দোয়াই বিফলে যায় না। শর্ত হচ্ছে দোয়া পাপ কাজ সংশ্লিষ্ট হতে পারবে না, দোয়াকারী আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী হবে না এবং দোয়ার ফলের জন্য তাড়াহুড়ো করা যাবে না। দোয়া কবুলের আরেকটি শর্ত হচ্ছে উপার্জন হালাল হতে হবে।
এ দিকে গতকালও বায়তুল মোকাররমে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মুসল্লিরা জুমার জামাতে অংশ নেন। জামাতের আগে খতিব আবার মসজিদে নামাজের ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাগুলো মুসল্লিদের স্মরণ করিয়ে দেন। এডিস মশার প্রাদুর্ভাবের কথা উল্লেখ করে এ মশা যাতে বংশবিস্তার করতে না পারে, তার জন্যও সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা