২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রেলের ড্রেনে বাজার নির্মাণ

কর্তৃপক্ষ কি এসব দেখে না?

-

সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিনিধি সৈয়দপুর (নীলফামারী) জানান, সৈয়দপুরে রেলওয়ের ড্রেনের ওপর অবৈধ সবজি বাজার নির্মাণ করে ইজারা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মেয়রের বিরুদ্ধে। অস্থায়ী পৌর সবজি বাজারের প্রতিটি দোকান ৫০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত জামানত নিয়ে ২৫ বছরের জন্য ব্যবসায়ীদের নাকি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
চার দশক আগে পৌরসভার আয় বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রেলওয়ে শর্তসাপেক্ষে ২৫ দশমিক ৭৫ একর জমি পৌরসভাকে হস্তান্তর করেছিল। চুক্তিভিত্তিক হস্তান্তর করা এ জমির মধ্যে ড্রেন নেই। পৌরসভা চুক্তির তোয়াক্কা না করে রেলওয়ের ড্রেনের ওপর অবৈধভাবে ইজারা দিয়েছে। ড্রেনটির উপরিভাগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। বর্ষায় নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা। এতে রেলওয়ে কারখানাসহ ড্রেনসংলগ্ন মহল্লা জলাবদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। পৌরসভা সূত্র জানায়, রেলওয়ের যে ২৫ দশমিক ৭৫ একর জমি দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে ড্রেনটি নেই। এটি রেলওয়ের মালিকানাধীন। জায়গার সঙ্কট থাকায় পৌরপরিষদ আয় বৃদ্ধি করতে সবজি বাজার নির্মাণ করেছে যা অস্থায়ী। পৌরসভা রসিদের মাধ্যমে ইজারার টাকা নিয়েছে। প্রতি ব্যবসায়ীর সাথে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করেছে। বিধিমতে মার্কেটের ইজারা চুক্তি করা হয় সরকার নির্ধারিত ফরমে।
সবজিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, মার্কেটটি সম্পূর্ণ অস্থায়ী। আমরা পেট বাঁচানোর তাগিদে চুক্তি করেছি। জামানতের টাকা যাতে ফেরত পাই, সে জন্য ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি। নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ী সবজিবাজার নির্মাণ করার দাবি জানাই।
বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি ও শহরের বর্জ্য নির্গমনের পথ রেলওয়ের এই ড্রেন। পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেনটির ওপর কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে নির্মাণ করছে সবজিবাজার। এতে তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষার পানি ও বর্জ্য নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হতে চলেছে। বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টি হলে দোকানপাটসহ মহল্লার বাড়িঘর পানিবন্দী হয়ে পড়ার আশঙ্কা। সংশ্লিষ্ট এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়বে। দুর্ভোগের লাঘব করতে আরেকটি বড় দুর্ভোগ সৃষ্টি সমর্থন করা যায় না। ড্রেনের ওপর দোকান নির্মাণ করা বেআইনি। তেমনি পরিবেশসম্মত নয়। এটি শহরবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলবে। রেলওয়ের ড্রেনের ওপর দোকানঘর নির্মাণের বিষয়ে জানতে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলীর (কারখানা) সাথে। তিনি বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বলেন, ‘দোকান ভাড়ার চুক্তি করা হয়েছে। বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ড্রেনের ওপর আগে থেকেই দোকান ছিল।’
সরকারি ড্রেনে সবজিবাজার কিভাবে হতে পারে? কর্তৃপক্ষকে এর দায় নিতে হবে। তারা দেখেও না দেখার ভান করলে হবে না। এ ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব সর্বাধিক।


আরো সংবাদ



premium cement