২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দূষণের ছোবলে বিপর্যস্ত রাজধানী

-

দূষণের ছোবলে এখন বিপর্যস্ত রাজধানী ঢাকা। দূষণের ক্ষেত্রে শব্দ, বায়ু, পানি, মাটি, খাদ্যসহ বাদ যায়নি কিছুই। কিছুতেই তা থেকে রেহাই মিলছে না। কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ কাজে আসছে না। উন্নতির বদলে দিন দিন এর অবনতিতে এখন দিশেহারা নগরবাসী। পরিবেশ রক্ষায় সরকারি বরাদ্দ শেষ হয়ে এলেও পরিবেশ রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ আজো শূন্যের কোটায়।
পরিবেশ সংগঠনগুলোর জরিপ বলছে, মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে রাজধানীর চারপাশে অবস্থিত নদীগুলোর মাছসহ অন্যান্য জীবের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। আর স্থানভেদে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সহনীয় মাত্রার চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে। আর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের গবেষণা বলছে, ঢাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি।
পরিকল্পনার অভাবে দূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে মন্তব্য করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার মাটি, পানি, বাতাস দূষিত হয়ে পড়ায় চারপাশের নদীগুলোও দূষিত হয়ে পড়েছে। কৃষিকাজে বিষাক্ত রাসায়নিক বা কীটনাশকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় চারদিকে দূষণের ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বাংলাদেশে পানি দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে আর্সেনিক। এখনো দেশের প্রায় পাঁচ কোটির বেশি মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহার করছে। অন্যদিকে দেশে শব্দদূষণের কারণে অনেক মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে বলে সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে আসে।
অন্যদিকে অন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপ অনুযায়ী গত কয়েক বছর থেকে ঢাকায় বায়ূদূষণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ইনডেক্স অনুযায়ী, বায়ু দূষণের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থানে ঢাকার নাম উঠে এসেছে।
পরিবেশবাদীদের মতে, ঢাকার চারপাশে থাকা ইটভাটা, পুরনো মোটরগাড়ি থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, নতুন রাস্তা সংস্কারের কাজ, যত্রতত্র খোলা ডাস্টবিন থাকায় নগরী এমন বিপজ্জনক অবস্থায় পড়েছে।
তাদের মতে, প্রধানত তিন ধরনের দূষণের কারণে রাজধানী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, শব্দ, বায়ু ও বর্জ্যদূষণ। এর ফলে রাজধানীর ৯০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে একটি সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এদিকে পরিবেশ অধিদফতরের পরীক্ষায়ও দেখা গেছে, ১৩টি নদীর মধ্যে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদীর পানির মান খুবই খারাপ। আর রাজধানীর প্রায় ৭০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য অপরিশোধিত অবস্থায় সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর পানি ভয়াবহভাবে দূষণ হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement