২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পৌর নির্বাচন ঘিরে বগুড়ায় চাঙ্গা বিএনপির তৃণমূল

-

বগুড়া পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে বিএনপির তৃণমূল চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন প্রশাসনিক চাপে কোণঠাসা নেতাকর্মীরা গাঝাড়া দিয়ে এখন নির্বাচনী মাঠে তৎপর। তাই যেকোনো সময়ের চেয়ে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী বলে দাবি করেছেন নেতারা।
উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বগুড়া পৌরসভা আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় পৌরসভা। এ পৌরসভার বর্তমান আয়তন ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ এবং ভোটার প্রায় ৩ লাখ। এখানকার বর্তমান মেয়র বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম মাহবুবর রহমান বিগত ২০০৪ সাল থেকে দলীয় সমর্থন ও মনোনয়নে চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ পৌরসভার সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ২১টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড সাতটি। সব মিলিয়ে এখানে একজন মেয়র, সতজন নারী কাউন্সিলর ও ২১জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। এখানকার একটি সাধারণ ওয়ার্ডে সর্বনিম্ন ৯ হাজার এবং সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ভোটার রয়েছেন। দেশের সবচেয়ে জনবহুল এই পৌরসভাটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। তাই মেয়র পদে বারবার বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করেন। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতের রয়েছে বড় ভোট ব্যাংক। সবমিলিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি এ পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলর পদে অধিকাংশ সময় তাদেরই প্রার্থীরা জয়ী হন। ২০১৫ সালের সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে ৮-১০টি ওয়ার্ড ও কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের পরেও বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রায় ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। এ ছাড়া প্রায় অর্ধেক সংখ্যক কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হন। তাই আসন্ন নির্বাচন ঘিরে বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মাঠে তৎপরতা শুরু করেছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চার ধাপের নির্বাচন পরিকল্পনার তৃতীয় ধাপে অর্থাৎ আগামী জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে এ পৌরসভার নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে ও নির্বাচনে জিততে ইতোমধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছেন।
বিএনপি ইতোমধ্যে তৃণমূলের প্রত্যক্ষ ভোটে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাকে চূড়ান্ত করে গণসংযোগ শুরু করেছে। এ ছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করতে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমা নিয়েছে। সূত্র জানায়, ২১টি সাধারণ ও সাতটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মনোনয়নের জন্য শতাধিক আবেদনপত্র নেয়া হলেও জমা পড়েছে ৯৬টি। জমা পড়া সাধারণ ওয়ার্ডের ৮১টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১৫টি আবেদন নিয়ে দলের একাধিক জরিপ টিম প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করছে। এসব টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিএনপি কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন দেবে বলে জানা গেছে। তাই মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা ও তাদের কর্মীরা অনেকে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও এখন সক্রিয় হয়েছেন।
বগুড়া শহর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবর রহমান বকুল বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মাঠজরিপ চলছে। তাদের জনপ্রিয়তা, আর্থিক সক্ষমতাসহ সবদিক বিবেচনা করে দলের বিভিন্ন জরিপ টিম প্রতিবেদন দেবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দলের কাউন্সিলর প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। তিনি আরো বলেন, যারা প্রশাসনের হামলা-মামলার শিকার হয়ে ঝিমিয়ে পড়েছিলেন তারাও এখন দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। সদ্য সমাপ্ত প্রতিটি ওয়ার্ড কর্মী সভায় এমন চিত্রই দেখা গেছে। বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মো: সিরাজ বলেন, বিএনপি সব সময় নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করেছে আ’লীগ। তবুও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, বিএনপি দলের মধ্যেও গণতন্ত্র চর্চা করে। তাই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী দলের কোনো একক নেতা নয়, তৃণমূল ঠিক করছে।


আরো সংবাদ



premium cement