২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাড়ছে ডেঙ্গুর ভয়

মশার অত্যাচারে টেকা দায়
-

কমলাপুর বিশ^রোড থেকে রাজারবাগ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে মশককর্মী আছেন ৫ জন। সকালে ড্রেন, নালায় থাকা মশার ডিম ধ্বংস করতে তারা লার্ভিসাইড প্রয়োগ করেন। আর বিকেলে উড়ন্ত মশা মারতে ব্যবহার করা হয় অ্যাডালটিসাইড। প্রতিদিন ৩ জন মশক কর্মী অ্যাডালটিসাইড ওষুধ প্রয়োগে কাজ করেন। ব্যবহার করেন দুটি ফগার মেশিন। ওষুধ ব্যবহার করা হয় ২০ লিটার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ ওয়ার্ডের একজন মশককর্মী জানান, তারা কমলাপুর বিশ^রোডের সবুজকানন থেকে মশার ওষুধ প্রয়োগ শুরু করেন এরপর পর্যায়ক্রমে রাজারবাগ পর্যন্ত যান। তারপর আবার সবুজকানন থেকে শুরু করেন। এভাবে এক এলাকায় নতুন করে ওষুধ প্রয়োগ শুরু করতে তাদের সাত-আট দিন লেগে যায়। ফলে প্রতিটি এলাকায় তিন দিন পরপর মশার ওষুধ প্রয়োগের ডিএসসিসির যে নিয়ম রয়েছে এ ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটছে। ওই মশককর্মী বলেন, আমাদের ফগার মেশিন আছে ৫টি। কিন্তু সিটি করপোরেশন থেকে ওষুধ দেয়া হয় কম। ওষুধ যদি বেশি দেয়া হতো তা হলে আরো বেশি ওষুধ প্রয়োগ করতে পারতাম। এভাবে ওষুধ কম দেয়ায় মশার অত্যাচার কোনোভাবেই কমছে না। সন্ধ্যা হলেই শুরু হচ্ছে মশার যন্ত্রণা। এতে করোনাভাইরাস সঙ্কটকালে মানুষকে ঘরে অবস্থান করেও ব্যাপকভাবে ভুগতে হচ্ছে। এর মধ্যে ডেঙ্গুর আতঙ্কও দেখা দিয়েছে।
তবে ডিএসসিসির বক্তব্য ভিন্ন। তারা সব সময়ই বলে, তাদের ওষুধের কোনো সঙ্কট নেই। ডিএসসিসি বর্তমানে ভারত ও চীন থেকে সরাসরি মশার ওষুধ আনছে। একইভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বক্তব্যও একই। তাদের ওষুধের কোনো সঙ্কট নেই। প্রয়োগও করছেন নিয়মিত। নতুন ফগার মেশিন কেনাসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তবে জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না ঠিকমতো। কারণ সিটি করপোরেশন যতই বলুক ওষুধ দিচ্ছে কিন্তু তাতে মশা তো কমছে না।
সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে উত্তরা এলাকায় মশার ওষুধ প্রয়োগের একটি ছবি আপলোড করা হয়। এরপর নাগরিকরা সেখানে অজস্র মন্তব্য করেছেন। তাতে বেশির ভাগই বলেছেন তাদের এলাকায় মশার অত্যাচার চলছে, কিন্তু ওষুধ নিয়মিত দেয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় ডেঙ্গু আতঙ্কে আছেন তারা। অনেকে মশারির ছবি দিয়েছেন যাতে মশার স্তর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
বেগম ফজিলাতুন্নেছা নামে ডিএনসিসির ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা লিখেছেন, মশার অত্যাচারে বিকেল বেলায়ও জানালা-দরজা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সাজ্জাদ নামে একজন লিখেছেন মিরপুর ১২-এর বি ব্লকে মশার অত্যাচারে টেকা যায় না। শাহরিয়ার পারভেজ নামে একজন লিখেছেন নিকুঞ্জ-২ এলাকায় মশার অত্যাচারে জনজীবন অতিষ্ঠ। দয়া করে একটু ব্যবস্থা নিন। এ ছাড়া অনেকেই লিখেছেন ডিএনসিসি শুধু উত্তরা, ধানমন্ডি, গুলশান এলাকার মতো অভিজাত এলাকায় বেশি ওষুধ প্রয়োগ করে। সে তুলনায় বাড্ডা, মিরপুরসহ অন্য কম উন্নত এলাকায় তেমন একটা ওষুধ দেয়া হয় না।


আরো সংবাদ



premium cement