৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সিংড়ায় স্কুল মাঠে বালুর স্তূপ বিপাকে শিক্ষার্থীরা

-

ইউসুফ আলী, আইনাল হক, আবির হোসেন, ইব্রাহিম, মাহিন, পলাশ ও আসাদ হোসেন প্রত্যেকে সিংড়া স্কুলের শিক্ষার্থী। ৮২ নং ছোট চৌগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাদের খেলাধুলা করে সময় কাটে। কিন্তু সম্প্রতি স্কুল মাঠে বালু উত্তোলন করছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও ঠিকাদার আবু বক্কর সিদ্দিক। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের একমাত্র খেলার মাঠ দখল মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সিংড়া উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পিডিপি-৪ প্রজেক্টের অতিরিক্ত ক্লাস রুম হিসেবে চার রুমবিশিষ্ট কোটি টাকা ব্যয়ে একতলা একটি ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএন ট্রেড। তবে কাজটি সাব-কন্ট্রাক্টে করছেন সিংড়ার মেসার্স তুষার কনস্ট্রাকশনের ঠিকারদার আবু বক্কর সিদ্দিক।
সরেজমিন দেখা যায়, স্কুল মাঠের তিন পাশে বোরিং করে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ১২টি পয়েন্ট থেকে পাইপ দিয়ে বালু উত্তোলনে বেশ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মাঠ দেবে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে খেলাধুলা করতে পারছে না স্থানীয় শিশু-কিশোর ও স্কুল শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় কৃষক আজাদ বলেন, এখান থেকে বালু উত্তোলনের জন্য গ্রাম প্রধান ও স্কুল সভাপতি নির্দেশ দিয়েছেন।
চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোকাদ্দেস আলী স্কুল মাঠ নষ্ট করে বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সভাপতির নির্দেশে বালু উত্তোলন হচ্ছে। পরে সেখানে ঠিকাদারের মাটি কেটে দেয়ার কথা রয়েছে। তবে তিনি এ বিষয়ে নিষেধ করেছেন।
সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের খেলার মাঠ। এখান থেকে বালু উত্তোলন করার এখতিয়ার কারোরই নেই। আর বালু কোথা থেকে আসবে সেটা ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদার জানেন। তা ছাড়া কাজ তো আমি করছি না।
ঠিকাদার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, প্রতিনিধি হিসেবে তিনি কাজ দেখাশোনা করছেন। আর এই কাজে আরো পার্টনার রয়েছে। তা ছাড়া কাজের স্বার্থে ও স্কুল সভাপতি নির্দেশে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পুনরায় ভরাট করে দেয়া হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, পিডিপি-৪ প্রজেক্টের অতিরিক্ত ক্লাস রুম হিসেবে চার রুম বিশিষ্ট একটি ভবন হচ্ছে। কাজ যথা নিয়মে হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে সেখানে বালু উত্তোলনের কোনো সম্মতি বা নির্দেশনা নেই বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল হাসান স্কুলমাঠ নষ্ট করে বালু উত্তোলনের বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন।


আরো সংবাদ



premium cement