১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


হতাশ করেছে বাংলাদেশ

সেঞ্চুরি করার পর সাব্বিরের উল্লাস :এএফপি -

২০০৬-২০০৭ সালে প্রথম নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ সফরে। সে থেকে এ পর্যন্ত চারটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর কোনো ম্যাচেই জেতেনি টিম বাংলাদেশ। প্রতিটা সিরিজই তিন ম্যাচের। আর প্রত্যেকটা সিরিজেই বাংলাদেশ ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়ে এসেছে। আগের গুলো হোয়াইওয়াশ হওয়া ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু এখন তো বাংলাদেশ অনেক উন্নত। এখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেনুতেও জিতে চলছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে বাজে অবস্থা। এমন অবস্থা হয়ে যায় সেখান থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ও খুঁজে বের করা যায় না। গতকাল ডানেডিনে শেষ হওয়া সিরিজে প্রতিটা ম্যাচেই হার বড় ব্যবধানে। শুধু হার বললেই হয় না। অসহায় আত্মসমর্পণ। গ্যালারিতে যারা খেলা দেখতে আসেন। কিংবা টিভি সেটের সামনে। তাদের জন্যও বিরক্তিকর এক ম্যাচ। যে খেলায় লড়াইয়ের আগেই হেরে যাওয়া সেটা দেখে সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। প্রথম দুই ম্যাচে প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে দায়িত্বশীলদের দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ার পর এ ম্যাচ দেখতে অনীহা চলে আসে। শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড রুটিন গেম খেলে ম্যাচ জিতে নেয়। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ড অবশ্য প্রথম ব্যাটিং করতে নামে। একটু ব্যতিক্রম সবাই আশা করেছিল। কিন্তু কী হবে। বাংলাদেশের বোলারদের অবস্থাও ব্যাটসম্যানদের মতোই। নিউজিল্যান্ড প্রথম ব্যাটিং করে সংগ্রহ করল ৩৩০/৬। সাকিব, মোহাম্মদ মিথুন বিহীন স্কোয়াড কী করবে তখনই বোঝা গিয়েছিল। টেনেটুনে ২৪২ পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ৮৮ রানের বড় ব্যবধানে হার।
নিউজিল্যান্ডে সফরে এমন হার প্রতিনিয়তই। আগের সিরিজটাও হয়েছিল ২০১৬-২০১৭ সালে। সেটার দিকে তাকালেও এমন ৩-০। শুধু নিউজিল্যান্ডই নয়। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এমন ভয়াবহ অবস্থা। ওখানেও হোয়াইটওয়াশ হতে হয় গেলেই। এ থেকে উত্তরণের বিশেষ করে উদ্যোগ নেই। সফর এলে গতানুগতিক ভাবেই খেলোয়াড় পাঠিয়ে দেয়া। অনেকটা রেজাল্ট যে এমনই হবে সেটা ধরেই যেন এগিয়ে যাওয়া।
মাশরাফি অধিনায়ক হিসেবে রীতিমতো হতাশ। খেলোয়াড়রা হতাশ হলেই বা কী। উপলব্ধিবোধ থাকলে তিন ম্যাচের স্কোর বোর্ডের দিকে তাকালে কন্ডিশনের চেয়ে বরং তাদের ব্যর্থতাই বড় হয়ে উঠে আসবে। সাব্বির রহমান এ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। ব্যাট হাতে স্ট্রাগল করেছেন তা কিন্তু নয়। ১১০ বলে ১০২ করে আউট। যার মধ্যে ছক্কার মার ২, চার ১২টি। স্বাভাবিক খেলাটা খেলেই ওই মার্কে পৌঁছেছেন তিনি। এর আগের দুই ম্যাচে মোহাম্মদ মিথুন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। যদি এ দুই ব্যাটসম্যান পারেন তাহলে অন্যরা নয় কেন? সমস্যা তাহলে কন্ডিশনে নয়। সমস্যা মনমানসিকতায়। সাব্বিরের প্রমাণ করার প্রয়োজন ছিল। নতুবা বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকতে হয়তো পারতেন না। অনেক পরিশ্রম করে সেটা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। তাকে নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কও হয়েছে। সেটার সৃষ্টি তিনি নিজেও। সব মিলিয়ে এমন একটা ইনিংস তার অনেক কিছুর জবাব। যার মাধ্যমে তিনি ফিরলেন অনেকটা দায়িত্বশীলভাবেই। কিন্তু অন্যরা? তামিম পুরোপুরি ব্যর্থ। লিটন তো আরো বাজে অবস্থায়। সৌম্য কিছু কিছু করেছেন। কিন্তু সেটাকে দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক কেউই পারেননি দায়িত্ব নিতে। এমন সিরিজের রেজাল্ট যা হওয়ার তাই। ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলেন, ‘দলের খেলোয়াড়রা সত্যিই হতাশ। জিততে না পারা ও এমন পারফরম্যান্সের (৩-০) পর হতাশা নেমে আসারই কথা।’ তবে তিনি বোলিংয়ে কিছুটা ভালো অবস্থা দেখেছিলেন বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ‘আসলে ৩৩০ স্কোর হয়ে যাওয়ার পর তেমন কিছু করার থাকে না। একটা বড় চাপ চলে আসে। তবে ওদের ইনিংসের ৩৫ ওভার পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। এরপর ম্যাচটা নিয়ে নেয় ওরা ওদের গ্রিপে।’ সংসদ সদস্য হওয়ার পর বিপিএলটাও এবার ভালো যায়নি। শিরোপা ধরে রাখা যায়নি। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে এসেও এমন পারফরম্যান্স বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ককে হতাশ করে দিয়েছে এটাই স্বাভাবিক।


আরো সংবাদ



premium cement