২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মন ছুঁয়ে যায়

-

মিলি অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না। এপাশ-ওপাশ করতে করতে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। বেড সুইচ অন করল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলÑ পৌনে ৩টা বাজে । আবারো হালকা মিউজিকে ছাড়ল গানটা।
যদি মনটা চাইতে গিয়ে/জীবন থেকে ফেলি হারিয়ে/দু’জনের বন্ধুতটাকেই.... ।
একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার বুক ছিঁড়ে। তারপর ধীরে ধীরে বেলকনিতে এসে দাঁড়াল। বাইরে চাঁদের আলো ঝলমল করছে। মৃদু মৃদু বাতাস বইছে। নিশ্চুপ প্রকৃতির ওপর চাঁদের আলোকে বেশ প্রাণবন্ত লাগছে। ইজি চেয়ারে বসল সে। বসে চাঁদের আলো দেখতে লাগল। তখনও ঘরে মিউজিক বাজছে।
সৌরভ মিলির বন্ধু। খুব ভালো বন্ধু। এতদিন সৌরভকে শুধু বন্ধুই ভাবত সে। কিন্তু ইদানীং মিলি অনুভব করছে সৌরভ এখন শুধু আর বন্ধুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এখন সে মিশে গেছে নিঃশ্বাসে। কিন্তু সৌরভকে এ কথা বলতে পারে না সে। পাছে ভয়, বলতে গিয়ে যদি হারিয়ে যায় বন্ধুত্বটাও। মিলি ঠিক করল, নাহ, আর নয়; এবার বলবেই সে। ফোনটা বের করে সৌরভকে কল দিলো।
ওপাশ থেকে সৌরভ বলল, হ্যালো।
জ্বি , মিলি বলছি।
এত রাতে! কী ব্যাপার বলো তো?
বারে, তোকে এত রাতে কল করতে নিষেধ আছে বুঝি।
না, ঠিক তা নয়। তুই তো কখনো গভীর রাতে কলটল করিস না, তাই ভাবলাম কোনো বিপদআপদ হলো না তো আবার।
না না। কোনো বিপদআপদ হয়নি। যে কারণে কল দিয়েছিÑ
বল।
তুই আজ একটু আমার সাথে দেখা করতে পারবি?
কেন? বল তো?
সেটা ফোনে বলা গেলে তো বলেই ফেলতাম। দেখা করতে বলতাম না।
ঠিক আছে। দেখা করব।
কখন?
তুই যখন চাইবি।
হি হি হি করে হেসে উঠল মিলি। জানতাম। তুই আমাকে না বলতে পারবি না।
তাই? এত কনফিডেন্স?
শতভাগ। শোন, আমরা সকাল ১০টায় দেখা করছি। মধুর ক্যান্টিনে ।
ওকে। বাই।
বাই।
মিলি ফোনটা কেটে দিলো। সারারাত ঘুম হয়নি। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুম ভেঙে দেখল সাড়ে ১০টা বাজে । ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল তেরোটা মিসড কল। ও মাই গড! সব ক’টা সৌরভ দিয়েছে। কল ব্যাক করল। সুইচ অফ। নির্ঘাত ক্ষেপেছে! যা ইগো ছেলেটার! তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ল। নিজের গাড়ি, নিজেই ড্রাইভ করছে সে। দ্রুতগতিতে গাড়ি ছুটছে। কত গতি? ভ্রƒক্ষেপ নেই তার। মাথায় শুধু সৌরভ। মধুর ক্যান্টিন।
হঠাৎ সামনে এসে পড়ে একটা লেগুনা। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আর। তারপর? আর কিছুই মনে নেই মিলির। যখন জ্ঞান ফিরল, দেখে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে সে। পাশে বসে আছে সৌরভ। সৌরভের হাতের মুঠোয় তার একটা হাত।
এখন কেমন আছিস মিলি?
ভালো ।
পাগলামি করিস কেন?
জানি না।
কেউ ওভাবে গাড়ি চালায়? ভ্যাগিস আমি ছিলাম তোর পিছে পিছে। তা না হলে
মিলি চোখ বড় বড় করে বলল, তুই পিছে পিছে ছিলি? এর মানে কী?
সৌরভ মুচকি হেসে বলল, হুম। তোকে তেরোবার কল দেয়ার পরও তুই ফোন রিসিপ না করায় আমার খুব টেনশন হয়। তাই ছুটে আসি তোর কাছে। এসে দেখি তুই ঘুমাচ্ছিস। আমাকে ১০টায় ডেকে নিজেই ঘুমাচ্ছিস! ঠিক আছে, দেখাচ্ছি মজা। ফোনের সুইচ অফ করে আড়ালে লুকিয়ে থাকি। তুই ঘুম থেকে উঠে গাড়ি নিয়ে বের হলে আমিও তোর পিছে পিছে বের হই।
ও। তাহলে এই কথা? দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
ওদের কথার মাঝেই রুমে ঢোকেন ডাক্তার। মুচকি হেসে বলেন, হ্যালো মিলি। এখন কেমন বোধ করছ?
ভালো। কোনো সমস্যা নেই।
হুম, আঘাতটা খুব বেশি গুরুতর নয়। আমি কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি। বাসায় গিয়ে এই ওষুধগুলো খাবে আর চব্বিশ ঘণ্টা বিশ্রামে থাকবে। ইনশাআল্লাহ আর কোনো সমস্যা হবে না।
ধন্যবাদ ডাক্তার।
ডাক্তার চলে গেলে মিলি কেন সৌরভকে ডেকেছিল তা বলতে চায় কিন্তু সৌরভ শুনতে চায় না।
মিলি অবাক হয়ে বলেÑ তুই আমার কথা শুনবি না?
নাহ। কারণ আমি এই পরিবেশে তোর কোনো কথা শুনতে চাই না। আমি চাই আগে বাড়ি চল। তারপর বিকেলের নরম রোদে দাদুর বাগানে বসে কফি খেতে খেতে তোর সব কথা শুনব।
সৌরভের কথা শুনে রিনিঝিনি শব্দে হেসে উঠল মিলি। ওর এই রিনিঝিনি শব্দের হাসিটা খুব সুন্দর। দেখেই মন ভালো হয়ে যায়। খুব ভালো লাগে সৌরভের। আর এই মন ভোলানো হাসিটা দেখার জন্যই কারণে অকারণে দিনে যে কতবার মিলিকে হাসানোর চেষ্টা করে সে।
সেতাবগঞ্জ, দিনাজপুর

 


আরো সংবাদ



premium cement
শায়েস্তাগঞ্জে নদীতে গোসলে নেমে এক ভাইয়ের মৃত্যু, নিখোঁজ আরেকজন রোববার থেকে চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক পাকুন্দিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ আসামি ৫২, গ্রেফতার ৪ জাল ভোট হলে তাৎক্ষণিক সেই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ : ইসি আহসান হাবিব রাবিপ্রবিতে‘এ’ ইউনিটের গুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতি ৭৭.৩৯ শতাংশ রাজধানীর জুড়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় নাগরপুরে তীব্র তাপদাহে হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে উপজেলা নির্বাচন : নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের যে শর্তের কথা জানালেন রিজভী গুচ্ছের বিজ্ঞান বিভাগে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৯০ শতাংশ গাজায় ছড়াতে পারে মহামারি নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন : বিচার কোন পর্যায়ে?

সকল