২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ৬ বছরেও শাস্তি হয়নি সোহেল রানাসহ দোষীদের

-

দেখতে দেখতে রানা প্লাজা ধসের ছয় বছর পার হতে যাচ্ছে আসছে ২৪ এপ্রিল। ২০১৩ সালের ওই দিনে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারো তরুণ। এত বড় ঘটনার ছয় বছরেও শাস্তি হয়নি সোহেল রানাসহ দোষীদের।
‘রানা প্লাজা ধস : অতীত ও বর্তমানের বোঝাপড়া’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ও প্রতিবাদ সভায় শ্রমিক নেতারা গতকাল এ কথা বলেন। রানা প্লাজা ধসের ছয় বছর উপলক্ষে এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ও প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়। এতে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার রানা প্লাজা ধসের সময়ে তোলা সাতটি ছবি বড় বিলবোর্ডের মতো ছাপায় রানা প্লাজার যেসব জায়গায় ছবি তোলা হয়েছিল সেসব জায়গায় স্থাপন করা হয়। এর মাঝে তাসলিমা আখতারের রানা প্লাজার শ্রমিক হত্যার আইকনিক ছবিটিও স্থান পায় এই প্রদর্শনীতে। ওই ছবিতে দেখা যায় দুইজন নারী-পুরুষ শ্রমিক জীবনের শেষ মুহূর্তে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। ছবিটি সারা দুনিয়ায় রানা প্লাজাসহ শ্রমিকদের জীবনের দুর্বিষহ চিত্র যেমন সামনে এনেছে। একই সাথে সামনে এনেছে শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার আকুতি। প্রদর্শনীতে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির গত ছয় বছরের কর্মসূচির কিছু আলোকচিত্র স্থান পায়।
বেলা সাড়ে ৪টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে বক্তৃতা করেন নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা খাতুন। আরো বক্তৃতা করেন : সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাস নাইন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল শামা ও সাভারের সংগঠক শাহ আলম। আহত শ্রমিক রূপালী, নিহত শান্তনার বোন সেলিনা এবং রানা প্লাজার নিহত পরিবারের অন্য সদস্য ও আহত শ্রমিকেরা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা অবিলম্বে সোহেল রানাসহ দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। সরকার মালিক কিংবা বায়ারের কাছে প্রাণ হারানো মানুষগুলো মেশিনের মতো কেবলই সংখ্যা। এদের স্মৃতি তাই বিস্মৃত করার চেষ্টা চলে। অথচ আমাদের কাছে এরা হাজারো প্রাণ, হাজারো স্বপ্ন। ভুলতে নয়, এই স্মৃতিকে আমরা জিইয়ে রাখতে চাই। জিইয়ে রাখতে চাই সেই দুঃসহ অনুভূতিকে, যা থেকে সঞ্চারিত হবে লড়াইয়ের শক্তি। এই জন্যই ছবির মাধ্যমে এই স্মৃতি জাগানিয়া কর্মসূচি ও প্রতিবাদের আয়োজন বলে জানান তারা। তারা বলেন, রানা প্লাজাসহ পোশাক খাতের ৪৪ লাখ শ্রমিক আমাদের অর্থনীতির প্রাণ। এই খাত গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনের অংশ। আর এ খাতের শ্রমিকেরা গ্লোবালাইজেশনের অংশ। এরাই বাংলাদেশের নাম সারা দুনিয়ায় পরিচিত করছে। অথচ প্রতি মুহূর্তে এই শিল্পকে বিকশিত করতে এই শ্রমিকেরা বিসর্জন দিচ্ছে তাদের তারুণ্য, শক্তি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ জীবনের মৌলিক প্রয়োজনীয় দিক। তারা বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে, আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিÑ ভবন মালিক সোহেল রানাসহ দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসের ২৪ কিংবা আশপাশের ছুটির দিন বা শুক্রবার প্রতিবাদ জানাব, তা আমরা জানিয়ে যাচ্ছি। একইসাথে শ্রমিকের মর্যাদা, মজুরি, নিরাপত্তা ও ট্রেড ইউনিয়নের জন্য আমরা লড়াইয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ।


আরো সংবাদ



premium cement