২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিদেশে চিকিৎসা নিতে রোগীর ঢল

দেশে কেন এটা করা যায় না?

-

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা রোগে আক্রান্ত অসংখ্য নারী-পুরুষ চিকিৎসার উদ্দেশ্যে অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। প্রতি বছর রেকর্ড পরিমাণ রোগী যাচ্ছেন ভারতে। এরপরই ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরের স্থান। বছরে প্রায় তিন লাখ রোগী বিদেশে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। এর ফলে দেশ হচ্ছে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং আমাদের চিকিৎসা খাতের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, চিকিৎসাসেবার অপর্যাপ্ততা, সমন্বয়হীনতা ও অব্যবস্থাপনা এবং রোগীদের আস্থাহীনতার কারণে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে উচ্চবিত্তরা সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে ছুটছেন; আর মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষ যাচ্ছেন ভারতে; প্রতি বছর অন্তত দুই লাখ বাংলাদেশী রোগী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেডিক্যাল ট্যুরিজমের ওপর জরিপ করেছে ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফআইসিসিআই)। ২০১৫ সালের তথ্যের নিরিখে তারা দেখিয়েছেন, প্রতি বছর তিন লাখেরও বেশি নাগরিক বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। তাদের বেশির ভাগের গন্তব্য প্রতিবেশী ভারত। অনেকে যান থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। ক্যান্সার, চোখ, দাঁত, কিডনি প্রতিস্থাপন, হৃদরোগ, কসমেটিক সার্জারি-সংশ্লিষ্ট রোগীরাই চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ ছাড়ছেন বেশি। চিকিৎসা পর্যটনের দিক দিয়ে ভারতের মোট আয়ের অর্ধেকটাই আসে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে। কেবল ২০১৫-১৬ সালে তারা ভারতে চিকিৎসার পেছনে ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ ডলার খরচ করেছেন। তাদের বেশির ভাগই সেবা নিয়েছেন কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, মুম্বাই ও দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে। ভারতের কোনো কোনো মহানগরীতে বাংলাদেশী রোগীদের এত সমাগম হয় যে, সেখানে তাদের জন্য আছে আলাদা আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁ। অনেককে কয়েক মাস ধরে সেখানে অবস্থান করে চিকিৎসা নিতে হয়। চিকিৎসা পর্যটন আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ভারতে বাংলাদেশের রোগী ও তাদের সাথে যাওয়া লোকজনের কাছে বসবাস ছাড়াও রান্নার উপকরণ ও সুবিধাসমেত বাসা ভাড়া দেয়া হচ্ছে। গড়ে উঠছে একের পর এক প্যাথলজিক্যাল প্রতিষ্ঠান। ইদানীং ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি কেবল মালয়েশিয়া নয়, চীনেও বাংলাদেশের অনেকে চিকিৎসার্থে যাচ্ছেন। চাহিদা থাকায় ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ এবং সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ ও ন্যাশনাল ভার্সিটির মতো বিখ্যাত হাসপাতালে বাংলাদেশীদের জন্য পৃথক ডেস্ক রয়েছে। বাংলা ভাষা জানেন, সেখানে এমন অভ্যর্থনাকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরের এলিজাবেথ হাসপাতালে যান বেশির ভাগ হৃদরোগী। এসব হাসপাতালের কাছেই গড়ে উঠেছে বাঙালিদের উপযোগী হোটেল-রেস্তোরাঁ ও লজ। রোগী এবং তাদের স্বজনদের নিয়মিত যাতায়াতের প্রেক্ষাপটে এ রুটগুলোতে বিমানসেবা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের চেন্নাই ও দিল্লিগামী ফ্লাইট সম্প্রতি চালু হয়েছে বিশেষত রোগীদের জন্য। বিমান ছাড়াও প্রতিদিন সড়কযোগে ও ট্রেনে করে অসংখ্য বাংলাদেশী ভারতে যাচ্ছেন রোগব্যাধির চিকিৎসার জন্য। বিদেশগামী রোগীদের ভিড় ক্রমবর্ধমান থাকায় এখন বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় দিনে গড়ে দু’টি এবং ব্যাংককে গড়ে তিনটি ফ্লাইট রয়েছে। এ দিকে, বেশ কয়েকজন গবেষক কাজ শুরু করেছেন বাংলাদেশের রোগীদের বিদেশমুখিতার কারণের বিষয়ে।
আমরা মনে করি, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় আমূল সংস্কার করে রোগীদের বিদেশমুখী স্রোত অনেকটাই কমানো সম্ভব। স্বদেশের চিকিৎসক ও চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পায়, এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা সরকারের একটা বড় দায়িত্ব। চিকিৎসাব্যবস্থার প্রয়োজনীয় বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনসাধারণের তৃণমূলপর্যায়ে চিকিৎসাসেবা পৌঁছানো দরকার। এসব উদ্যোগ অবিলম্বে যদি নেয়া হয়, তাহলে রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বহুলাংশে হ্রাস পাবে এবং দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অনেকাংশে সাশ্রয় ঘটবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে চুয়েট ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু হিলিতে ভটভটি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২ ‘গাজার ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে ১৪ বছর লাগতে পারে’ সখীপুরে ছাগল চুরির মামলায় মা-ছেলে কারাগারে ‘অন্যায়ের সাথে নয়া দিগন্তের সাংবাদিকরা কখনোই আপোষ করেন না’ রাজশাহীতে হলে ঢুকতে না দেয়ায় রাস্তায় বিসিএস পরীক্ষার্থীর কান্না

সকল