২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ

গভর্নিং বডির সভাপতির পদত্যাগ দাবি শিক্ষকদের

-

শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের গভর্নিং বডির (জিবি) সভাপতি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ খানের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল করেছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা গতকাল কোনো ক্লাসে অংশ নেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ খানকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। জানা গেছে, সভাপতির নানা অনিয়মের ব্যাপারে গত বেশ কয়েক দিন থেকেই শিক্ষকদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই একপর্যায়ে গত শনিবার রাতে গভর্নিং বডির বৈঠকে শিক্ষকরা সভাপতিকে ঘেরাও করেন। একপর্যায়ে সভাপতি গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত বৈঠক মূলতবি করেন। গতকাল শিক্ষকদের বিক্ষোভ ও আপত্তির মুখে গভর্নিং বডির বৈঠক হতে পারেনি। শিক্ষকরা গতকাল সকাল থেকে সভাপতির পদত্যাগ চেয়ে মিছিল করেন। সাধারণ শিক্ষকরা তিন প্রতিনিধির (শিক্ষক প্রতিনিধির) প্রতিও অনাস্থা জানিয়েছেন। এ ছাড়া স্টাফ কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে সব শিক্ষক সভাপতির প্রতি অনাস্থা জানান। শিক্ষকদের অনাস্থাপত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে পাঠানো হয়েছে।
কলেজের শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সভাপতি যোগদানের পর থেকে নানা কায়দায় ও ফন্দি করে টাকা লুটপাট করছিলেন। প্রায় ১৭ কোটি টাকায় কেরানীগঞ্জের অজপাড়া গাঁয়ে কলেজের নামে জমি কিনেন। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। জমি কেনা হয়েছে জাল দলিলে। কোনো কোনো দলিলে প্রদেয় অর্থের বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে জমি কেনার নামে অর্থ লুট করা হয়েছে। সরকারি নিয়োগ বিধি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভেঙে ৪৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন না করে ১৫-২০ দিন পর ফল প্রকাশ করা হয়। সভাপতি প্রতি মাসে গড়ে ৬৫ হাজার টাকা কলেজ থেকে তুলে নিয়েছেন। নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বেহিসাবে ব্যয়ের অভিযোগ আছে। এরুপ নানা অভিযোগে শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ। এরই মধ্যে বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগে কলেজের স্থায়ী অধ্যক্ষকে বরখাস্থ করে নিজের লুটপাটের এক সাক্ষী একজনকে অধ্যক্ষ পদে বসানোর উদ্যোগ নিলে শিক্ষকরা সভাপতিসহ গভর্নিং বডির অন্য সদস্যদেরসহ ঘেরাও করে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একজন ইংরেজি বিভাগের সাবেক প্রধান আসমা পারভীন বলেন, এই সভাপতির কাছে কলেজের সম্পদ নিরাপদ নয়। তিনি শিক্ষকদের অশোভন, আপত্তিজনক ও মানহানিকর ভাষায় গালাগাল করেন।
কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খালিদ মাহমুদ বলেন, সভাপতি একজন শিক্ষক। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড শিক্ষকসুলভ নয়। সব শিক্ষক ও কর্মচারী তার পদত্যাগ চায়। সভাপতির পদত্যাগ বা অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করবেন।
জানতে চাইলে কলেজেরর অধ্যক্ষ মো: আবদুর রহমান কলেজে দু’দিনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে। তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধির যোগসাজশে এত অপকর্ম হয়েছে যে, তারা (সাধারণ শিক্ষকরা) আর এই সভাপতিকে মেনে নিতে পারছেন না। এ গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ খানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে মিটিংয়ে আছি বলে ফোন রেখে দিয়েছেন ।


আরো সংবাদ



premium cement