২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নিরাপদ শহর গড়তে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এখন সময়ের দাবি

-

সরকারের উচিত হেঁটে চলাচল, নৌ যাতায়াত ব্যবস্থা, গণপরিবহন, পরিবেশবান্ধব সাইকেল ও রিকশায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে বেশি বিনিয়োগ করা। কারণ ব্যক্তিগত গাড়ি কোনোভাবেই নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে পারে না। বরং পরিবেশ দূষণ, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তাই নিরাপদ শহর গড়তে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এখন সময়ের দাবি।
গতকাল ঢাকায় আন্তর্জাতিক কার ফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। উদ্বোধন উপলক্ষে ঢাকার আবাহনী মাঠের সামনে থেকে ১৬টি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য সাইকেল ও রিকশা র্যালি আয়োজন করা হয়। এ সময় বিশাল একটি ব্যক্তিগত গাড়ির ছবি কেটে র্যালির যাত্রা শুরু করে।
আইডব্লিউবিবির নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসনের সভাপতিত্বে র্যালির আগে সংক্ষিপ্ত পথসভার আয়োজন করা হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন, স্টামফোর্ড বিশ^বিদ্যালয়ের উপদেষ্টা রেহেনা আক্তার এবং ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারি।
দেবরা ইফরইমসন বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি শুধু ঢাকার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করছে না পাশাপাশি সারা পৃথিবীতে ব্যক্তিগত গাড়ির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার জনজীবনে নানাবিধ সমস্যা তৈরি করছে। ফলে দেশে দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলন জোরালো হচ্ছে। এ বাস্তবতায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে পৃথিবীর ১২ দেশের বিভিন্ন সংগঠন একযোগে কাজ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক কার ফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্সের যাত্রা শুরু করল। তিনি আরো বলেন, দেশে দেশে সরকার ব্যক্তিগত গাড়িবান্ধব অবকাঠামো তৈরিতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে।
মারুফ হোসেন বলেন, ঢাকায় মাত্র ৯ ভাগ যাতায়াত হয় ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে। কিন্তু শহরের মোট রাস্তার ৭০ ভাগ দখল করে নিয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। যদিও বলা হয়ে থাকত যানজটের অন্যতম কারণ রিকশা। এটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ঢাকার যেসব রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছে সেসব রাস্তায় গাড়ির গতি আগে থেকে অনেক কমেছে। যেমন মিরপুর সড়কে রিকশা বন্ধের আগে গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় ১৭.৪ কিলোমিটার। এখন তা মাত্র ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার। ঢাকার বাস্তবতায় ব্যক্তিগত গাড়ি আদর্শ বাহন নয়। ব্যক্তিগত গাড়ি যানজট বৃদ্ধি, পরিবেশদূষণ ও সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি করছে। সারা পৃথিবীতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে, গণপরিবহনের মান উন্নয়ন করা হচ্ছে। নিরাপদ শহর গড়তে আমাদেরও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর ১২ দেশে আজ নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কার ফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্সের যাত্রা শুরু হয়েছে। দেশগুলো হলো ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, কানাডা, উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, আমেরিকা। বাংলাদেশে ঢাকা ছাড়াও ২০ জেলায় আন্তর্জাতিক কার ফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে র্যালি, পথসভা, অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement