২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাবির মানববন্ধনে ভিপি নূর ঈদের আগেই কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য ও শ্রমিকের মজুরি নিশ্চিত করুন

-

আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য দেয়ার জন্য দ্রুত কমিটি করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নূর। পাশাপাশি ওই সময়ের মধ্যেই শ্রমিকের মজুরিও পরিশোধ করারও দাবি জানান তিনি।
গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থিত রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ধানসহ সব কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রদান এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানোর দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এতে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, ফারুক হাসান, লুৎফুন্নাহার লুমা, মাহফুজ খান, মশিউর রহমানসহ শতাধিক উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন থেকে অভিযোগের সুরে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার কৃষকদের পরিবর্তে বড় বড় চোরদের রক্ষায় ব্যস্ত। এ সময় কৃষকদের রক্ষায় ছাত্রসমাজ সোচ্চার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত থাকে। কৃষকদের রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নিলে ছাত্রসমাজকে এভাবে মাঠে নামতে হতো না। তিনি বলেন, যাদের উৎপাদিত পণ্য খেয়ে বেঁচে আছি, তাদের সঠিক মূল্য আমরা দিতে পারছি না। মন্ত্রীরা বক্তব্য দিচ্ছেনÑ ধান বেশি হওয়ায় দাম কমে যাচ্ছে। অথচ চালের দাম ঠিকই বেশি। সিন্ডিকেটের কারণে ধানের দাম কমে যাচ্ছে। চালকল মালিকেরা পরিকল্পিতভাবে মূল্য কমিয়ে দিয়েছেন। সরকারের এ ক্ষেত্রে কোনো নজরদারি নেই।
নূর বলেন, খুলনায় পাটকল শ্রমিকেরা বকেয়া মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছেন। সেখানে সরকার বাধা দিয়েছে। কোনো শ্রমিক সংগঠন বা সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণ মানুষের পালস বোঝে না। এ সময় কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা কৃষকসহ সব শ্রমিক, মেহনতি মানুষের পাশে আছি। তাদের অধিকার রক্ষায় পাশে থাকব। এজন্য প্রয়োজনে লংমার্চ করা হবে। আগেই এ ঘোষণা করা হয়েছে।
এসব সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে ডাকসু ভিপি বলেন, ঈদের আগেই পাটকল ও গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতে হবে। কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য দিতে হবে। ছাত্রসমাজকে দাবায়ে রাখতে পারবেন না। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে ছাত্রসমাজ মাঠে নামবে। এদের না বুঝলে সরকার ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। এক মণ ধানের দাম ৪৫০-৫০০ টাকা। এই ধান থেকে চাল হয় ১২০০ টাকার। ৭০০ টাকা খেয়ে ফেলছে সিন্ডিকেট। অথচ বীজ উৎপাদন থেকে শুরু করে ধান উৎপাদন পর্যন্ত কৃষকদের কী পরিমাণ কষ্ট করতে হয় তা আমরা জানি। এর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার দায় রাষ্ট্রের। কৃষকদের মহাসমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সরকারের নিকট দাবি রেখে পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, খরচ অনুযায়ী কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য দিতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরাসরি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কৃষিতে ভর্তুকি দিয়ে কমমূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য হয়রানি এবং ঝামেলা মুক্ত কৃষিঋণ প্রদানেরও দাবি জানান তিনি। এর আগে গত সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে দেশব্যাপী এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজনের পাশাপাশি দেশের সব কমিটি পৃথকভাবে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement