২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রধানমন্ত্রীর নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার অভিযোগ

৫ সাইবার অপরাধী গ্রেফতার
-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্য এবং জাতীয় নেতাদের নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচ সাইবার অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত বুধবার রাতে রাজধানীর মগবাজার, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ ও সাভার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ ওমর ফারুক (৩০), সাব্বির হোসেন (২৪), আল আমিন (২৭), আমিনুল ইসলাম (২৫) ও মনির হোসেন (২৯)। তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন ও ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে সক্রিয় হওয়া সাইবার অপরাধী চক্র এখন ভিন্নপথ অবলম্বন করছে। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব চক্রের অন্য অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব সদস্যরা তৎপর রয়েছে। মুফতি মাহমুদ খান বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা ভুয়া পেজে প্রধানমন্ত্রীর নামে নম্বর দিয়ে তাদের নম্বর যোগ করে দেন। এতে অনেকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে ওই নম্বরে ফোন দিয়ে প্রতারণার শিকার হন। প্রতারক ব্যক্তিরা সম্প্রতি সংসদে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন ফরম নেয়া প্রার্থীদের ফোন দিয়ে তাদের মনোনয়ন নিশ্চিতের বিষয়ে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চালান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পেশায় ব্যবসায়ী ওমর ফারুক প্রধানমন্ত্রীর নামে ছয়টি, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে একটি এবং আওয়ামী লীগ গোষ্ঠীসহ জাতীয় নেতাদের নামে ৩৬টি পেইজ চালিয়ে আসছিলেন। এসব পেইজে তিনি নিজের ব্যক্তিগত নম্বর দিয়ে রেখেছিলেন। কেউ ফোন করলে ফারুক তাদের বলতেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে তারা এই পেইজ পরিচালনা করছেন। সারা দেশে কে কী করছে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো তার কাজ। ফোনে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ইনবক্সে যোগাযোগকারী ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে আর্থিক সুবিধা চাইতেন ফারুক।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার সাব্বির হোসেনের নামে সন্ত্রাস দমন আইনে দু’টি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে চারটিসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। সাব্বির আগে তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশনেত্রী সাইবার ফোরাম পেইজের অ্যাডমিন ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ‘শেখ হাসিনার পরামর্শ’ ও ‘সায়মা ওয়াজেদ পুতুল’ নাম দিয়ে দু’টি পেইজ থেকে নিরাপদ সড়ক চাই ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় উসকানিমূলক ভিডিও পোস্ট করেন। যেকোনো নতুন ইস্যুর সৃষ্টি হলেই সাব্বির তা সরকারবিরোধী অপপ্রচারে রূপান্তর করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতার আল আমিন সাইবার আপরাধে সম্পৃক্ত একটি পেইজের অ্যাডমিন। তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় নেতাদের ছবি বিকৃত আকারে প্রকাশ করতেন। বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশকে নিয়ে মিথ্যা তথ্যসংবলিত ভুয়া ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত আমিনুল ইসলাম আমিন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সহযোগী সংগঠন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর একজন সদস্য। তিনি ফেসবুকে চারটি অ্যাকাউন্ট ও তিনটি পেইজ চালানোর পাশাপাশি ইউটিউবে বিভিন্ন ‘কমিক আইটেম’ প্রচার করে আসছিলেন। আওয়ামী লীগের লোগো সংযোজন করে একটি প্রজন্ম চেতনা ও স্পাই উদ্দিন নামে দু’টি ফেসবুক পেইজ থেকে গুজব সৃষ্টির পাশপাশি উসকানিমূলক ভিডিও পোস্ট করতেন তিনি।
র্যাব জানায়, ‘সত্যের বিস্ফোরণ’ নামের একটি ফেসবুক পেইজের অ্যাডমিন মনির হোসেন তিনটি অ্যাকাউন্ট চালিয়ে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে কেরানীগঞ্জ থানায় বেশ কয়েটি মামলা রয়েছে। ফেসবুকে তিনি রাজনৈতিক অপপ্রচার, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement