রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১৪ শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে তুলে এনে চার শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের তুলে এনে বঙ্গবন্ধু হলে মারধরের পর রাত ৯টায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
তারা হলেন, সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিম হাসান, আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরুখ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মুহাইমিন এবং একই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লিটন। এদের মধ্যে লিটনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারধরে তার পা রক্তাক্ত এবং দুই হাতে গুরুতর জখম হলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া বাকি ১০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, শিবির সন্দেহে ১৪-১৫ জনকে বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর চারজনের বিরুদ্ধে শিবির-সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
তবে আটকের পর পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় লিটন ও মুহাইমিন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেনÑ ‘আমরা ক্যাম্পাসে বিকেলে ঘুরতে এসেছিলাম। এ সময় সন্দেহবশত ছাত্রলীগের নেতারা আমাদের আটক করে। তারা বিনা কারণে আমাদের মারধর করেছে। আমরা কোনো শিবির করি না।’
এ দিকে, আটককৃতরা বঙ্গবন্ধু হলে থাকাকালীন মতিহার হল ও মমতাজ উদ্দীন ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য ঘটনা শোনার পর সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। তবে হল প্রাধ্যক্ষ হলে না থাকায় সেখানে কিছু করা সম্ভব ছিল না।
নগরীর মতিহার থানার (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চারজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর আগের একটি নাশকতার মামলায় তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুস্থ হলে আদালতে তোলা হবে।