২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সিলেট সিটি নির্বাচন

আরিফের স্বস্তি : কামরান ও জুবায়ের প্রচারণায় এগিয়ে

-

বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েও শান্তিতে ছিলেন না সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। দলের নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে থাকায় বেকাদায় ছিলেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে নানা কারণে এমনিতেই তার দূরত্ব রয়েছে। সেলিম প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তারপরও সক্রিয়ভাবে মাঠে নামেননি তৃণমূলের কর্মীরা। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার বদরুজ্জামান সেলিম এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এর ফলে সেলিম ফিরে পেয়েছেন দলীয় পদ আর আরিফ রয়েছেন স্বস্তিতে। এবার আরিফের প্রচারণায় গতি আসবে এমনটি মনে করছেন নগর বিএনপির নেতারা। তারা মনে করেন, আরিফ এবারো বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। এখানে জামায়াতের ভোট কোনো ফ্যাক্টর নয়।
জামায়াতের মহানগর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের পক্ষে শুরু থেকেই বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক মাঠে নেমে কাজ করছেন। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল নগরীর প্রায় সকল ওয়ার্ডেই জুবায়েরের টেবিল ঘড়ি প্রতীকের পক্ষে জোর প্রচারণা চলে। দলের কর্মী-সমর্থকরা আশাবাদী, নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে নগরবাসীর ভোটে এবার মেয়র হবেন অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। কারণ নগরবাসী এবার নতুন মুখ দেখতে চান। গতকাল দিনে নগরীর বিভিন্ন স্থানে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের গণসংযোগ করেন। গত বৃহস্পতিবার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কানিশাইল, ঘাসিটুলা, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের লালদীঘিরপাড়, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লেকসিটি আবাসিক এলাকায় টেবিল ঘড়ি মার্কার সমর্থনে অনুষ্ঠিত পৃথক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুবায়ের বলেন, কয়েকটি রাস্তা বড় করা কিংবা খাল-ছড়া উদ্ধার করাকে নগরীর উন্নয়ন বুঝায় না। নগরীর উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে নাগরিক সেবার মান নিশ্চিত করা। নগর পরিচালনার সাথে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা। নগরীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত মডেল নগরী গড়ার লক্ষ্যে টেবিল ঘড়ির বিজয় নিশ্চিত করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
২০ দলীয় জোটের শরিক বড় দুই দলের দুইজন প্রার্থী থাকায় এবার মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সহজেই জয়ী হবেনÑ নেতাকর্মীরা এমনটি মনে করছেন। যদিও গত নির্বাচনে কামরান ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। নগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, গত ৫ বছরে সিলেটে সরকারের নানা জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ড ও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় সিলেট নগরবাসী এবার নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবারো কামরানকে বিজয়ী করবেন। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শুরু থেকেই নৌকা প্রতীকের পক্ষে মাঠে নেমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। গতকাল নগরীর দক্ষিণ সুরমার কায়স্থরাইল এলাকায় গণসংযোগকালে কামরান বলেন, এবারই হয়ত সিলেট সিটিতে তার জীবনের শেষ নির্বাচন। তিনি বলেন, জানি না আর কতদিন বাঁচবো। অতীতেও সিলেটের মানুষের পাশে ছিলাম। সুখে-দুঃখে মানুষের ডাকে সর্বদা সাড়া দিয়েছি। জীবনের শেষ সময়ে এসে নগরবাসীর উন্নয়ন ও কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করতে চাই। তিনি বলেন, অতীতে আমাকে কারাগারে রেখে নগরবাসী এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছেন। আমি এ ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে পারিনি। আগামী দিনে জীবন দিয়ে হলেও ঋণ শোধ করার চেষ্টা করব।

 


আরো সংবাদ



premium cement