পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার প্রবেশের বিভিন্ন সড়কপথ ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর ২৪টি আয়রন ব্রিজের মধ্যে ৮ আয়রন ব্রিজ এখন নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। ব্রিজগুলো ১৫ বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি। ছোট-বড় যেকোনো গাড়ি উঠলেই কেঁপে উঠছে ব্রিজগুলো প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কলাপাড়াবাসী। কোনো কোনো ব্রিজের স্লাব ভেঙে ফাঁকা হয়ে গেছে। মূল পিলারসহ ক্রস এঙ্গেল মরিচা পড়ে ভেঙে পড়েছে। অনেক ব্রিজের লোহার পাত ও এঙ্গেল চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এসব ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীরা এবং অসুস্থ ও গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে কষ্টের কোনো শেষ থাকে না। অনেক সময় মুুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। কিন্তু এসব ব্রিজ মেরামত না করায় গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সেতু অতিক্রম করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটেছে দুর্ঘটনা। ব্রিজ নির্মাণের পরে গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচিত হলেও বর্তমানে ব্রিজগুলোর মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের অভাবে তাদের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ব্রিজগুলো নির্মাণ হলে বদলে যেতে পারে উপজেলার উন্নয়নের সার্বিক চিত্র।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২৪টি আয়রন ব্রিজের মধ্যে আটটি আয়রন ব্রিজ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। জরাজীর্ণ আয়রন ব্রিজগুলো হলোÑ লতাচাপলী ইউনিয়নে লক্ষèীর বাজার ব্রিজ, ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নে ডালবুগঞ্জ বাজার ব্রিজ, ধুলাসার ইউনিয়নে নতুনপাড়া ব্রিজ, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নে মধুখালী ব্রিজ, লালুয়া ইউনিয়নে বানাতি বাজার ব্রিজ, নিলগঞ্জ ইউনিয়নে গামুরতলা ব্রিজ, ধানখালী ইউনিয়নে কলেজ বাজার ব্রিজ।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বরকুতিয়া রাস্তা-লক্ষèীর বাজার সড়কে ব্রিজটি অন্য জায়গার ব্রিজের স্লাব এনে ব্রিজের অর্ধেক করে আর বাকি অংশ গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করে। কিন্তু যে অংশে স্লাব দিয়ে করে তার বেশির ভাগ স্লাব ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়রা তক্তা দিয়ে চলাচল করেন। ব্রিজের একাধিক স্থানে জোড়াতালি দিয়ে চলছে পারাপার। একাধিকবার ওই ব্রিজের স্থলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকে পঙ্গুত্বেও জীবন কাটাচ্ছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভের সাথে জানান। একই অবস্থা দেখা গেছে, ধানখালী কলেজ বাজার সড়কে ব্রিজটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। ওই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করার জন্য শত শত লোক চলাফেরা করে। ছোট-বড় যেকোনো গাড়ি উঠলেই কেঁপে উঠছে ব্রিজ। মূল পিলারসহ ক্রস এঙ্গেল মরিচা পড়ে ভেঙে পড়েছে।
এরপর ধুলাসার ইউনিয়নে নতুনপাড়া খালের ওপরের আয়রন ব্রিজটি দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। মানুষ এক পায়ে দিয়ে হেঁটে ব্রিজ পার হতে হয়। মানুষ চলাচল করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পড়েছে। এ ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
একই দৃশ্য দেখা গেছে, করুণ দশা ডালবুগঞ্জ বাজার আয়রন ব্রিটির। মানুষের চলাচলের এই আয়রন ব্রিজটির ঢালাই স্লিপার ভেঙে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। কোনো যানবাহন এখন আর চলাচল করতে পারছে না। পায়ে হেঁটে চলাচলও দুরূহ হয়ে গেছে। ভেঙে যাওয়া স্লিপারের বদলে কাঠের তক্তা, গাছের গুঁড়ি দিয়ে কোনোমতে মানুষ এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে পারাপার করছে। মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের সাথে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ডালবুগঞ্জ বাজারের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম আয়রন ব্রিজটি; যা এখন বিধ্বস্তের শঙ্কায় পড়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কলাপাড়া এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মান্নান বলেন, বর্তমানে নতুন আয়রন ব্রিজ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে গুরুত্ব অনুসারে বিধ্বস্ত ব্রিজ এলাকায় গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা