আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার পেপারবুক আগামী চার মাসের মধ্যে তৈরি হবে। এরপর এ বছরই হাইকোর্টে আপিলের শুনানি শুরু হবে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিচারিক আদালত যদি কাউকে ফাঁসি দেন তবে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী সেই মামলা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্ট ডিভিশনে চলে যায়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলা; এখানে রায়ে কিছুসংখ্যক আসামির ফাঁসি হয়েছে, কিছুসংখ্যক আসামির যাবজ্জীবন হয়েছে। ফাঁসি হওয়ার কারণে মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে চলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছেন, তারাও আপিল করেছেন। হাইকোর্ট বিভাগের নিয়ম হচ্ছে ডেথ রেফারেন্স এবং আপিল একসাথে ট্যাগ করে তারা শুনানি করে। সে ক্ষেত্রে কিছু ফর্মালিটিজ আছে, যেগুলো কমপ্লিট করতে হয়। যেমন ধরেন, যাদের ফাঁসি হয়েছে, তাদের পেপারবুক সরকারকে তৈরি করে দিতে হয়, বিজি প্রেসের তৈরি।’
‘এই পেপারবুকে মামলার যাবতীয় কাগজ থাকে। এটা তৈরি করার পর মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়, তারপর শুনানি হয়।’
আনিসুল হক বলেন, ‘আমি এইটুকু বলতে পারি, এ মামলার পেপারবুক তৈরি হওয়ার জন্য যে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম, সেটা শুরু হয়ে গেছে। যেমন- কাগজপত্র আসার পর এখানে কাগজপত্র সর্টিং হয়, সব কাগজপত্র সর্ট করার পর এটা বিজি প্রেসে চলে যায়। সেক্ষেত্রে আমি এইটুকু বলতে পারি, সেই কাজ শুরু হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রসিকিউশন থেকে দেখব, এ পেপারবুক তৈরিটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, সেটা যেন হয়।’
‘এই মামলায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬১ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আরও ১৬৪ জনসহ মোট ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সওয়াল-জবাব তো আছেই। সব মিলে এটা বৃহৎ হবে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত তৈরি করে মামলা রেডি করে, হাইকোর্ট বিভাগের কার্যতালিকায় এনে, শুনানি শুরু করতে।’
পেপারবুক তৈরির ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে যতদূর খবর আছে, এটা দুই-চার মাসের মধ্যে রেডি হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এ বছরের মধ্যে শুনানি শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।’
এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা সব সাজাপ্রাপ্ত আসামি, যারা বিদেশে আছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে অনেক সময় কিছু জটিলতা হয়, সেসব জটিলতা আমরা নিরসন করার চেষ্টা করছি। আমরা আশা করি, এ রায় কার্যকর করার জন্য তাদের ফিরিয়ে আনা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে।’