১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

প্রস্তাবিত বাজেট শিক্ষাবান্ধব নয় : ছাত্রশিবির

-

২০২৩-২৪ সালের প্রস্তাবিত বাজেটটি শিক্ষাবান্ধব বাজেট নয় বলে মন্তব্য করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। গতকাল এক লিখিত প্রতিক্রিয়ায় শিবির নেতারা বলেন, বাজেটে কলমের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে গত বছর থেকে শিক্ষা উপকরণের চরম হারে যে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে তা আরো প্রকট হবে। কাগজের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেক প্রকাশনা সংস্থা দেউলিয়া হয়ে গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ কিনতে বেগ পেতে হচ্ছে। এ দিকে বিভিন্ন মহল হতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধির জোর দাবি থাকলেও কখনোই তা সরকারের দৃষ্টিতে আসছে না। ফলে টাকার অঙ্কে মোট বাজেট বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আগের চেয়ে কমছে। ২০২৩-২৪ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১২ শতাংশ ছিল। সে হিসেবে নতুন অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের অনুপাতে কমেছে।
বিবৃতিতে শিবির নেতারা আরো বলেন, চলতি অর্থবছরের শিক্ষা খাতের বাজেট বরাদ্দ দেখে অবাক হওয়ার দশা! কারণ, শিক্ষায় যে পরিমাণ বাজেট বরাদ্দ দেয়ার কথা ছিল, তার অর্ধেকও এবার দেয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক মানদ-ে একটি দেশের শিক্ষা খাত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ বা বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ পেলে তা আদর্শ ধরা হয়।
আমরা মনে করি, একটি দেশের মূল উন্নয়ন হওয়া উচিত শিক্ষায়; কিন্তু আমাদের বাজেটে বেশি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে অবকাঠামো খাতে, যা মোটেও কাম্য নয়।
ভালো শিক্ষক না থাকলে ভালো শিক্ষার্থী তৈরি হবে না। এটা নিশ্চিত করা দরকার ছিল যে, এখানে মেধাবী শিক্ষকরা যাতে যোগদান করে এবং তারা যেন তিন-চার বছর পর অন্য চাকরিতে ভালো সুযোগ পেলে চলে না যান। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের চাকরি স্থানান্তরের প্রবণতা অনেক বেশি।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, বাংলাদেশে কারিগরি এবং মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থায় প্রায় ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়াও রয়েছে কওমি মাদরাসার প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী। দেশে অল্প কিছু মাদরাসা সরকারি। অবকাঠামোগত দিক দিয়ে মাদরাসা যুগ যুগ থেকে অবহেলিত। আর দেশের বাস্তবিক অগ্রগতির জন্য কারিগরি ক্ষেত্রে উন্নত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। মুখে মুখে কারিগরি শিক্ষার কথা বলা হলেও সেখানে নেই বড় ধরনের কোনো বিনিয়োগ। আমরা লক্ষ্য করছি, এ দুই শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি বরাদ্দ মোট শিক্ষা খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দের মাত্র ১২ শতাংশ। ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি নীতিনির্ধারকদের বিমাতাসুলভ আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।


আরো সংবাদ



premium cement