২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মিরসরাইয়ে লাউয়ের জোড়া ৮ টাকা!

গাছ কেটে ফেলছেন কৃষক
-

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কৃষকেরা প্রতি পিস লাউ ৪ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারছেন না। একজোড়া লাউ মাত্র ৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই ক্ষোভে অনেক কৃষক লাউ গাছ কেটে ফেলেছে। বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পেরে বাজারে ফেলে যাচ্ছেন অনেকে। চরম বিপাকে পড়েছেন উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার কৃষকেরা।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার প্রায় ৩০০ একর জমিতে লাউ চাষ করা হয়। গ্রীষ্মকালীন সময়ে অনেক কৃষক লাউ চাষ করে বেশ লাভবান হলেও এবার রমজান মাস শুরু হওয়ায় লাউয়ের চাহিদা কমে যায়। এতে করে ভোক্তারা আগের মতো লাউ ক্রয় না করায় চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে চাষিদের।
জানা গেছে, লাউ চাষ করতে সার, বীজ, সেচ, শ্রমিক, মাচা তৈরিসহ অনেকটা টাকা খরচ করতে হয়। প্রথম দিকে প্রতিপিস দেড়-দুই কেজি ওজনের একটি লাউ বিক্রি করেছেন ৪০-৪৫ টাকায়। মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি করেছেন ২৫-৩৫ টাকা প্রতি পিস। শেষ সময়ে রমজান শুরুর সময় থেকে প্রতিপিস লাউ ৩-৫ টাকা বিক্রি করেছেন।

খৈয়াছড়া এলাকার কৃষক আকতার হোসেন, গত মঙ্গলবার জমি থেকে ১৫৫ পিস লাউ তুলেছিলেন। লাউ তুলতে শ্রমিক খরচ হয় ৩৫০ টাকা। বাড়ি থেকে বড়তাকিয়া বাজারে নিতে ভ্যানভাড়া খরচ হয়েছে ১৫০ টাকা। বাজারের হাসিল দিয়েছেন ৭০ টাকা। তার মোট খরচ হয়েছে ৫৭০ টাকা। আকতার বলেন, লাউয়ের মাচায় এখনো ৩০০ পিস লাউ ঝুলে আছে। এগুলো তুলে বিক্রি না করলে মাচা ভেঙে ক্ষতির মুখে পড়ব। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এত কম দামে লাউ বিক্রি হয়নি। এবার পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ী কেউ লাউ কিনছে না। ফলে পানির দরে লাউ বিক্রি করতে হচ্ছে।

উপজেলার মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার চাষি সাহাব উদ্দিন বলেন, এবার আমি ১০ শতক জমিতে লাউ চাষ করেছি। যখন বাজারে ভালো দাম ছিল, তখন ফলন আসেনি। পুরোদমে ফলন যখন বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়েছে, তখন পতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ টাকা। তাই রাগ করে লাউ গাছ কেটে ফেলেছি। তিনি আরো বলেন, অনেকের লাউ মাচায় পচে যাচ্ছে। তুলে বাজারে নিলে যাতায়াত ভাড়াও হচ্ছে না।

মিরসরাই পৌর সদরের খুচরা তরকারি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রমজান মাস আসায় মানুষ মাছ, গোশতসহ অন্যান্য তরকারি নিয়ে যাচ্ছে। লাউয়ের চাহিদা কমে গেছে। আমরাও বিক্রি করতে পারছি না। তাই কৃষকদের কাছ থেকে সামান্য পরিমাণ লাউ ক্রয় করছি। মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, এবার উপজেলায় ৩০০ একর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। মৌসুমে শুরুতে লাউয়ের দাম ভালো ছিল। শীত কমে যাওয়ার কারণে লাউয়ের চাহিদা কমে গেছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে লাউয়ের উৎপাদন হয়েছে। তবে অন্যান্য জিনিসপত্রের যে দাম কৃষক সে তুলনায় এখন লাউয়ের একেবারে দাম পাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement