২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ দরপতনে ফিরছে না তারল্য

-


অব্যাহত দরপতনে পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ বেড়েই চলেছে। পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। দু’দিন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও এখন আবার টানা দরপতনের জালে। পতনের ফলে বাজারের তারল্য বা বাজারমূলধন কমেছে এক দিনে চার হাজার ৬৮৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানির মধ্যে ৮০.৯১ শতাংশের শেয়ার মূল্য হারিয়েছে। সূচকগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পয়েন্ট হারিয়েছে। গত দুই দিনে সূচক কমেছে ১০৭ পয়েন্টের বেশি। এই দুই দিনের বড় ঝাঁকুনিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারো আতঙ্ক নেমে এসেছে। আর আতঙ্কে কমেছে লেনদেন। আসছে না নতুন করে কোনো বিনিয়োগ।
দুই বাজারের লেনদেনে তথ্য থেকে বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার লেনদেনের সূচনার পরপরই পয়েন্ট হারিয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে। লেনদেনের কয়েক মিনিটের মাথায় সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। এরপরই পতনের পথ ধরে। বেলা ১টা নাগাদ সর্বনিম্নে নেমে আসে সূচক। এরপর কিছুটা পয়েন্ট ফিরে আসে। এমন পতনের মধ্যে থাকা বাজারে লেনদেন শুরু হতেই বিক্রির চাপ বাড়ান একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী। ফলে লেনদেন শুরু হতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৬.৭৩ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৮৩৪.৩৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ১৭.৮৫ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৬৭.১৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৬.১২ পয়েন্ট কমে একন ২ হাজার ২৪.৯২ পয়েন্টে রয়েছে। ডিএসইতে ১৩ কোটি ৫৭ লাখ ১৫ হাজার ৬৪০টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৪৪৫ কোটি ৫৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকায়। যেখানে রোববার লেনদেন হয়েছিল ৫৮০ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। ফলে লেনদেন বেড়েছে ১৮৭ কোটি টাকার বেশি।
ডিএসইতে ৩৯৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ৩১৮টির বা ৮০.৯১ শতাংশের এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির। এক দিনের ব্যবধানে ডিএসইর বাজারমূলধন ০.৬৮ শতাংশ বা চার হাজার ৬৮৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা কমে এখন ছয় লাখ ৮৩ হাজার ৭০০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যা রোববার ছিল ছয় লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৩৪টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। এসব কোম্পানির ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ২৮৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইস্টার্ন ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান কটন এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকারও বেশি। ইস্টার্ন ব্যাংকের ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে মোট ১১ কোটি ছয় লাখ ৯৯ হাজার টাকায়। আর স্কয়ার ফার্মার ছয় কোটি ৫৪ লাখ টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ছয় কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, আমান কটনের দুই কোটি ৫৩ লাখ পাঁচ হাজার টাকার এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের দুই কোটি সাত লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সবগুলো সূচকই গড়ে শতাধিক পয়েন্ট করে হারিয়েছে। সিএএসপিআই সূচক ১৬৮.১২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১০২ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ সূচক ১০৯ পয়েন্ট কমেছে। ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৮টি শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে মোট ১৬ কোটি ২৮ লাখ এক হাজার ৭৬৯ টাকায়। রোববার দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকার। সিএসইতে ২১৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টি প্রতিষ্ঠানের। আগের দিন সিএসইতে ২৩৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৫৭টির, কমেছিল ১৫২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৬টি প্রতিষ্ঠানের।


আরো সংবাদ



premium cement