২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মিয়ানমারে আরেক সেনাঘাঁটি পুড়িয়ে দিলো কারেন বিদ্রোহীরা

-

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আরো একটি ঘাঁটির দখল নিয়েছে সশস্ত্র কারেন বিদ্রোহীরা। এরপর সেটি জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। দুই সপ্তাহ আগে বার্মিজ সেনাদের একটি ঘাঁটি দখলে নেয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। জানা গেছে, শুক্রবার মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে সালউইন নদীর কাছে টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় বিদ্রোহী সংগঠন ‘কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন’ এর সামরিক শাখা ‘কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’। কয়েক রাউন্ড গুলি চলার পর প্রায় বিনাযুদ্ধে সেনাশিবিরটি দখল করে জ্বালিয়ে দেয় তারা। ইয়াহু নিউজ।
ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হয়ে উঠছে। গণতন্ত্রকামীদের প্রবল বিক্ষোভের পর আরো সক্রিয় হয়েছে বিদ্রোহীরা। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী সংগঠন। মিয়ানমারের কারেন প্রদেশে দীর্ঘদিন ধরেই স্বশাসনের দাবি জোরালো হচ্ছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অং সান সু চির সরকার ক্ষমতায় আসার পর আলোচনার টেবিলে এসেছিল সংগঠনটি। কিন্তু সেনা অভ্যুত্থানের পর আলোচনা ভেঙে যায়। কারেন বিদ্রোহীদের ওপর লাগাতার বিমান হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনা। এ দিকে মিয়ানমারের সামরিক সরকার জানিয়েছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরার আগে আসিয়ানের কোনো দূতকে স্বাগত জানানো হবে না। শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া ব্রিফিংয়ে নিজেদের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সামরিক কাউন্সিলের মুখপাত্র মেজর কাউং হেট সান। মেজর কাউং হেট সান বলেন, স্থিতিশীলতা ফেরার আগে আসিয়ান প্রতিনিধির সফরের সাথে সরকার একমত নয়। কেননা, এতে করে বিক্ষোভকারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আরো রক্তক্ষয়ী সহিংসতার পথ উন্মোচিত হবে।
গত মাসেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাং-এর উপস্থিতিতে দেশটির সঙ্কট উত্তরণে পাঁচটি পয়েন্টে একমত হয় আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সদস্যরা। এতে সহিংসতার অবসান ঘটানো, সেনাবাহিনী ও বিরোধীদের মধ্যে সংলাপ, মানবিক সাহায্যের অনুমতি এবং আসিয়ানের একজন বিশেষ প্রতিনিধিকে মিয়ানমার সফরের অনুমতি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। তবে শুক্রবার সামরিক কাউন্সিলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা এখন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিতে চান।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ইস্যুতে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরই কেবল সরকার আসিয়ানের দূতের সাথে সহযোগিতা করতে পারে। মেজর কাউং হেট সান বলেন, আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো সরকার বাস্তবায়ন করবে; যদি সেটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আটক করা হয়। এরপরই দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ শুরু করেছে গণতন্ত্রপন্থীরা। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় আট শত বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছে হাজার হাজার গণতন্ত্রপন্থী। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement