ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে এরই মধ্যে ১৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এখনো উদ্ধারকাজ চলছে, অনেকে নিখোঁজ। বন্যার পানি নেমে গেলেও যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কবে কাটিয়ে ওঠা যাবে এ নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
কেবল রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট রাজ্যেই শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। ৭৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর রাস্তা, ব্রিজের ক্ষয়ক্ষতি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আল্টেনআর শহরের মেয়র কর্নেলিয়া ভাইগান্ড আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সুপেয় পানির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে হতে পারে বাসিন্দাদের। জার্মানির বিল্ড পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘অবকাঠামো এত বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, কোনো কোনো এলাকায় কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাসও সুপেয় পানি না থাকতে পারে।’
পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা এরই মধ্যে পরিদর্শন করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। পুনর্গঠন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মোকাবিলায় তার সরকার কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে নির্বাচন। এবার আর মার্কেল নির্বাচনে লড়ছেন না।
আগামী নির্বাচনে গ্রিন পার্টির চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আনালেনা বায়েরবক। এআরডির মরগেন ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরো হতে থাকবে। ‘আবহাওয়ার এমন প্রতিকূলতা আরো বাড়তে থাকবে।’
এই বন্যার ঘটনা জলবায়ু রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
চ্যান্সেলর নির্বাচিত হলে বায়ুবিদ্যুৎ ও অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বায়েরবক।
বাভারিয়া রাজ্যে ম্যার্কেলের দল সিডিইউ’র সহযোগী দল সিএসইউ’র নেতা এবং বাভারিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লড়াই তীব্র করার আহ্বান জানিয়েছেন। এআরডিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই বন্যাকে ‘সতর্কবার্তা’ বলে উল্লেখ করেন।
তার রাজ্যে জলবায়ু সংকট নিয়ে একটি নতুন আইন প্রণয়নের কাজ চলছিল। বন্যার পর সেটিকে বাস্তবায়ন করার কাজ আরো এগিয়ে আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বন্যায় মূলত জার্মানির পশ্চিমের কয়েকটি রাজ্য বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দক্ষিণের বাভারিয়াও আক্রান্ত হয়েছে। অস্ট্রিয়া সীমান্তের বের্শটেসগাডেন থেকে বন্যার জল বাড়িতে ঢুকে পড়ায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয়েছে।
বন্যার ঘটনায় জার্মানির প্রাকৃতিক দুর্যোগ সতর্কতা ব্যবস্থার বেশ সমালোচনা হয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক সতর্কতা জারি করতে না পারায় এত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। কিন্তু এ অভিযোগ মানতে নারাজ ফেডারেল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দফতর- বিকেকে।
বিকেকে’র প্রধান আরমিন শুস্টার ডয়েচলান্ডফুংক রেডিওকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সতর্কতা অবকাঠামো আমাদের মূল সমস্যা না। আমাদের সমস্যা হচ্ছে সতর্কতা দেয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ এবং জনগণ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।’
শুস্টার জানান, গত সপ্তাহের বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তার সংস্থা ১৫০টি সতর্কতা জারি করেছিল।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা