০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যশোরে ক্ষুরা রোগের প্রকোপ

অর্ধশত গরুর মৃত্যু কেন?

-

একটি জাতীয় দৈনিকের যশোর সংবাদদাতা জানিয়েছেন, যশোরের চৌগাছায় ক্ষুরা রোগে কয়েক দিনে অর্ধশত গরুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে কৃষক ও খামারের পাঁচ হাজারের অধিক গরু। ফলে কৃষক ও খামারিরা দিশেহারা। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলারও অভিযোগ উঠেছে।
পল্লী পশুচিকিৎসকের পরামর্শে এর ওষুধ ব্যবহার করেও রোগটির নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। এতে এলাকার গরু-ছাগল পালনকারী কৃষক ও খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদফতর জানায়, ভ্যাকসিন ওষুধেও কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। পরীক্ষা করে চিকিৎসা চলছে। আক্রান্ত গরুর ভ্যাকসিন, টিকা ও ওষুধ পুশ করা হয়েছে। তাদের ধারণা, এটি ক্ষুরা রোগের নতুন ধরন। চৌগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে জানা যায়, চৌগাছা উপজেলায় খামারের সংখ্যা দুই হাজার ৩০৪টি এবং মালিক ও কৃষকদের গরুর সংখ্যা প্রায় সোয়া লাখ। তিন সপ্তাহ আগে এই উপজেলায় ক্ষুরা রোগ দেখা দেয়। অতি সম্প্রতি এই রোগে পুড়াপাড়া এলাকার আবুলেস হোসেনের একটি, লালচাঁদের একটি ও বাবলুর রহমানের একটি, পাতিবিলার রিতা ডেইরি ফার্মে দু’টি, আরাধনের একটি, সঞ্জয় ঘোষের দু’টি, নারায়ণপুর ইউনিয়ন বুন্দলীতলা গ্রামের তরিকুল ইসলামের একটি ও একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের একটি, চাঁদপাড়া গ্রামের আবু ছার হোসেনের একটি ও বুলু রহমানের একটিসহ উপজেলায় অর্ধশত গরু ক্ষুরা রোগে মারা গেছে। প্রত্যেকটি গরুর মূল্য ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা। কয়েক দিনেই প্রায় কোটি টাকার গরু মারা গেছে। চাঁদপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের দু’টি, আবু সালামের একটিসহ উপজেলায় শতাধিক ছাগলও মারা গেছে।
এ বিষয়ে একাধিক কৃষক ও ডেইরি ফার্ম মালিক অভিযোগ করেন, চৌগাছা প্রাণিসম্পদ অফিসের কাউকে গ্রামে আসতে দেখা যায় না। গরু-ছাগলের ফার্ম মালিকরা তাদের চেনেও না। কোনো ব্যক্তি গরু-ছাগলের চিকিৎসা নিতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গেলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করার অভিযোগও রয়েছে। সরকার প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে কর্মসূচি গ্রহণ করলেও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের গড়িমসির ফলে তা মাঠে মারা যাচ্ছে। সরকারের কোটি টাকা ব্যয় হলেও সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষক ও ফার্ম মালিকরা।
সিংহঝুলি গ্রামের ফার্ম মালিক টাইফুর রহমান টাইম হোসেন বলেন, খামারের ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরু ভ্যাকসিনসহ ওষুধ দিয়েছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। ফার্মের সব গরু বিক্রি করে দেয়ার কথা ভাবছি। তিনি বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কোনো লোক ফার্মে আসেন না। বারবার যোগাযোগ করেও লাভ হয়নি। প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন এসে আক্রান্ত গরুগুলোর চিকিৎসা দিলে হয়তো রক্ষা পেতাম।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আনোয়ারুল কবির বলেন, রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। জনসচেতনতা সৃষ্টি, উঠান বৈঠক ও মেডিক্যাল ক্যাম্প করে রোগের প্রতিকার সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। সাধারণত এফএমডি বা ক্ষুরা রোগের ধরন দু’টি। ধারণা করা হচ্ছে, এ উপজেলায় আক্রান্ত রোগটি নতুন ধরন। আশা করা হচ্ছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে রোগটি কিছুটা কমে আসবে। লোকবল কম থাকায় কাক্সিক্ষত সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে।


আরো সংবাদ



premium cement