১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সম্প্রসারণ

বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় শুরুতেই

-

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীতকরণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। একই সাথে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক অথবা স্বল্পমূল্যে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।
২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে আট বছর অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সম্প্রসারণের কথা বলা হয়। সরকার ২০১৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম হাতে নেয়। ২০১৬ সালের মে মাসে, শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীতকরণের পদক্ষেপ নেয়। এই দীর্ঘ সময়ে মাত্র ৬৯৬টি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হয় সরকার। বলা হচ্ছে, অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় পুরোটা করা যায়নি। দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এর মধ্যে ৬৯৬টি বিদ্যালয়ে সম্প্রসারণ করা সম্ভব হয়ে থাকলে বাস্তবায়নের হার কত? এই যদি হয় বাস্তবায়নের হার তাহলে এটিকে চরম ব্যর্থতা বললেও কম বলা হয়। নতুন করে একই কার্যক্রম হাতে নেয়ার মতো কী প্রস্তুতি আছে তা স্পষ্ট নয়।
গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, যেসব বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা চালু করা সম্ভব গত ৩০ এপ্রিল সেগুলোর তথ্য চেয়েছিল সরকার। কতগুলো বিদ্যালয় তথ্য দিয়েছে তা জানা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, এ মুহূর্তে আরো ১৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। পুরো কার্যক্রম কত দিনে বাস্তবায়ন করা হবে, এ জন্য অবকাঠামো ও শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ কী কী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে তার কোনো পথনির্দেশনা আসেনি।
বর্তমান সরকার শিক্ষা নিয়ে যত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে অতীতে কোনো সরকার তেমনটি করতে পারেনি। কিন্তু প্রতিটি উদ্যোগ কার্যত সফলতার মুখ দেখেনি। এমনকি শিক্ষাক্রমের মতো কাজও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি সরকার। দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের বিপরীতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে নানাভাবে। এমনকি সব নাগরিকের জন্য শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে যে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার সেটিও করতে পারেনি। বরং শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়ে কার্যত শিক্ষা সঙ্কোচনের নীতি গ্রহণ করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, অর্থের অভাবে কোনো শিক্ষার্থী যাতে নিম্নমাধ্যমিক থেকে ঝরে না পড়ে সেই প্রয়াস তাদের থাকবে। কিন্তু বাস্তবে শিক্ষা নিয়ে যা হচ্ছে তা কোনোভাবে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক মনে করার কারণ নেই। যেভাবে প্রায় প্রস্তুতিবিহীন কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে তাতে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোটি ২০ লাখ শিক্ষার্থীকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার আওতায় আনতে এ সরকারের কত বছর লাগতে পারে সেটি কেউ জানেন না। আগামী তিন বছরে তারা ১০ হাজারের মতো স্কুল এ কার্যক্রমে আনতে পারবেন বলে আশা করছেন। গত ১৪ বছরের কর্মকাণ্ড কিন্তু এ আশাবাদের পক্ষে যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল