২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
গ্রীষ্মের আগেই গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিশ্চিত

-

টানা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় বর্তমান সরকার। ক্ষমতাসীনদের বয়ান, দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। এর মধ্যে দেশ শতভাগ বিদ্যুতায়ন অন্যতম। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, শতভাগ বিদ্যুতায়ন হলেও দেশের সব জায়গায় সমভাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে কি না। বাস্তবতা হলোÑ তীব্র লোডশেডিংয়ে শতভাগ বিদ্যুতায়নের সুফল জনগণ পাচ্ছেন না। উল্টো রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে পরিশোধ করতে হচ্ছে।
শীত বিদায় নিতেই বাড়ছে বিদ্যুৎচাহিদা। সাথে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। কোনো কোনো জেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষকে এখনই দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে কাটাতে হচ্ছে। লোডশেডিংয়ে কৃষি উৎপাদন ও খামার পরিচালনায় সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।
জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে না পারায় বিগত দুই বছর গ্রীষ্মে দেশে গড়ে ৩ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে। কোথাও কোথাও ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল। এবার পরিস্থিতি ভালো থাকার আশা কম। বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকলেও ভাড়া দিতে হয়, যা ক্যাপাসিটি চার্জ নামে পরিচিত। গত অর্থবছরে ক্যাপাসিটি চার্জের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা এখন দিনে ১২ হাজার মেগাওয়াট। গ্রীষ্মকাল শুরু হলে অর্থাৎ এপ্রিলে বেড়ে ১৭ হাজার মেগাওয়াটে দাঁড়াতে পারে। জ্বালানির সরবরাহ না বাড়ালে তখন লোডশেডিং পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
একটি সহযোগী দৈনিককে পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেছেন, চাহিদার চেয়ে গ্যাসের সরবরাহ কম। তাই গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। এতে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।
দেশের গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। গত সোমবার দিনেও ঘণ্টায় প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পেয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে বড় ঘাটতি হচ্ছে ময়মনসিংহ বিভাগে। ফলে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুরে লোডশেডিং বেড়েছে। টাঙ্গাইল, পিরোজপুর, কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু করে লোডশেডিং করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রমতে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট। গত সোমবার দিনে সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল বেলা ৩টায় ১২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। ওই সময়ে সরবরাহে ঘাটতি ছিল ৭৫৭ মেগাওয়াট, যা লোডশেডিং দিয়ে পূরণ করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার ছুটির দিনে রাত ৮টায় সারা দেশে সর্বোচ্চ এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে।
স্বাধীন জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি তথ্যের চেয়ে বাস্তবে আরো বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পাওয়া যাচ্ছে না, তবুও বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতার মূল্য দিতে হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না দিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে দফায় দফায়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতো আমরাও মনে করি, সরকার অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে এবং সারা দেশে বিদ্যুতায়ন করে এর কৃতিত্ব নিতে এমন কাণ্ড করেছে। অথচ বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল নিশ্চিত কিভাবে হবে তা আমলে নেয়নি যার খেসারত এখন সবাইকে দিতে হচ্ছে। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর নামে বেপরোয়াভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার উজাড় করছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফতুল্লা ৮৩০ গার্মেন্টেস শ্রমিক বিরুদ্ধে মামলা শ্রীনগরে ২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ টানা চতুর্থবার কমলো স্বর্ণের দাম দেশের রাজনীতি ঠিক নেই বলেই অর্থনীতির ভয়ঙ্কর অবস্থা : সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন বগুড়ায় ২ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ৫ সোনারগাঁওয়ে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় নেপালের পানিবিদ্যুৎ কিনছে ভারত, বাংলাদেশের অগ্রগতি কতটুকু? ‘নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে বিএনপি থেকে চিরতরে বহিষ্কার’ ইউক্রেনের জন্য ৬ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের বগুড়ার শেরপুর প্রেসক্লাবের পুন: সভাপতি নিমাই-সম্পাদক মান্নান হিট স্ট্রোকে পাইকগাছার ইটভাটা শ্রমিকের মৃত্যু

সকল