২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ঝুঁকিতে দেশের জনস্বাস্থ্য

পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

-

নীরোগ ও সুস্থ নাগরিকের ওপর নির্ভর করে যেকোনো দেশের সামগ্রিক উন্নতি ও অগ্রগতি। এর জন্য চাই দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর সুস্থ জীবনের নিশ্চিত পরিবেশ। যে দেশের জনস্বাস্থ্য যত বেশি টেকসই, সে দেশের নাগরিক তত বেশি কর্মঠ। সুস্থ-সবল নাগরিকই দেশ গড়ার কাজে নিষ্ঠার সাথে আত্মনিয়োগ করতে পারেন। এ জন্য প্রতিটি দেশ জনস্বাস্থ্যের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
সবার জানা, একটি দেশের জনস্বাস্থ্য নির্ভর করে পুষ্টিমানসম্পন্ন নিরাপদ খাবার, বিশুদ্ধ পানি, মানসম্পন্ন ওষুধ ও নির্মল বায়ুর ওপর। এসব যাতে কোনোভাবেই নিম্নমানের আর দূষিত না হয়; সে জন্য প্রতিটি দেশের সরকার নিজেদের বাজারে তীক্ষè নজরদারিসহ নানাবিধ কর্মসূচি নেয়, যাতে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না পড়ে। কিন্তু আমাদের দেশে নাগরিকজীবনে নিরাপদ খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং মানসম্পন্ন ওষুধ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে, বায়ুদূষণ শহরাঞ্চলে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সূচকেও সে কথা বলা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে দেশের জনস্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নাগরিকের নিরাপদ খাবার এবং বিশুদ্ধ পানিপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতকে আদেশ দিতে হচ্ছে। অথচ যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এটি নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত; তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে এমনটি হওয়ার কথা ছিল না।
একটি জাতীয় ইংরেজি পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভেজাল খাদ্য, ভয়াবহ দূষিত পানি, নিম্নমান ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের জন্য বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বর ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় ঢাকাবাসীর জন্য তা অতিরিক্ত স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, ভেজাল খাবার, পশুসম্পদ, পোলট্রি মুরগি ও মাছের খাবারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার; নিম্নমানের ওষুধ এবং পরিবেশ দূষণের কারণে দেশে জনস্বাস্থ্যের বিপত্তি দেখা দিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি ছয়জনে একজন অপুষ্টিতে ভুগছেন। জোগাড় করতে পারছেন না পর্যাপ্ত খাবার। ‘দ্য স্টেট অব ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০১৯’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন ১৫ জুলাই প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, গত এক দশকে বাংলাদেশে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১০ লাখ। ২০০৪ সালে এ সংখ্যা ছিল প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ, যা ২০১৮ সালে বেড়ে দাঁড়ায় দুই কোটি ৪০ লাখে। অর্থাৎ অপুষ্টিতে ভুগছেন প্রতি ছয়জনে একজন। বেড়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের স্থূলতা। রক্তস্বল্পতায় আক্রান্ত নারীদের হার বেড়েছে। বাংলাদেশে বসবাসকারী প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ২০১৬ সালে ৩৬ লাখের স্থূলতা ছিল। ২০১২ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ। ২০১৬ সালে রক্তস্বল্পতায় আক্রান্ত নারীর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৮২ লাখ; যেখানে ২০১২ সালে এ সংখ্যা ছিল এক কোটি ৭৪ লাখ।
আমরা মনে করি, দেশের সামগ্রিক উন্নতি ধরে রাখতে নাগরিকদের জন্য নিরাপদ খাবার, খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই। একই সাথে জনস্বাস্থ্যের জন্য ইতোমধ্যে যেসব ঝুঁকি দেখা দিয়েছে, তা কমাতে জরুরি ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি কিছু হলেও কর্মসূচি নিতে হবে। তবে স্থায়ী ও টেকসই সমাধানের জন্য নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি। সবার আগে, দ্রুততার সাথে বাজার থেকে ভেজাল খাবার তুলে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই দেশের জনস্বাস্থ্য কিছুটা হলেও ঝুঁকিমুক্ত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
দশমিনা ট্রাকচালককের হত্যা করে রড ছিনতাই : ২ দিনের রিমান্ডে শিক্ষক দূরদর্শনের লোগোর রং বদলে ‘গেরুয়া’ করা নিয়ে বিতর্ক মিরসরাইয়ে হিটস্ট্রোকে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু শিক্ষার্থীদের শাসনের ব্যাপারে শিক্ষকদের যে অনুমতি দিলো ভারতীয় হাইকোর্ট গাজা যুদ্ধে ব্যর্থতা : পদত্যাগ করছেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান কুষ্টিয়াতে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালক নিহত নাইজেরিয়ায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে ১১ মিলিশিয়া যোদ্ধা নিহত মুরাদনগরে বাস-সিএনজির সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ৩ পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা গাজাবাসীর দৃঢ়তা দেখে ফরাসি কোচের ইসলাম গ্রহণ ইরাকে সমাকামিতার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৫ বছরের কারাদণ্ড

সকল