২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মফিজকে পিটিয়ে মৃত ভেবে ভুট্টা ক্ষেতে ফেলল বন্ধু : নেপথ্যে পরকীয়া!

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) সংবাদদাতা - নয়া দিগন্ত

মফিজকে পিটিয়ে মৃত ভেবে ভুট্টা ক্ষেতে ফেলল বন্ধু : নেপথ্যে পরকীয়া!


শ্রীনগরে পরকীয়ার জেরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক বন্ধুকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে তারই বন্ধু। হাতুরি পেটা ও ছুরিকাঘাত করে মৃত ভেবে ফেলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা মফিজুল নামে ওই বন্ধুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় সোমবার মফিজুলের শশুর আব্দুর রহমান শ্রীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত শনিবার রাতে উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের সালেপুর এলাকায় একটি ভুট্টা ক্ষেত থেতে মুমূর্ষ অবস্থায় মফিজুলকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন। ঘটনার পর থেকেই মফিজের ঘাতক বন্ধু পারভেজ পলাতক রয়েছেন।

মফিজুলের শাশুড়ি জানান, মফিজুলের বাড়ি শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায়। সে বিয়ের পর থেকে আমাদের বাড়িতেই থাকে। তাদের সংসারে ছয় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। মফিজ বীরতারা এলাকার পারভেজের সাথে সহকারী হিসেবে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। কাজের সুবাদে মফিজের সাথে পারভেজের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সুবাদে পারভেজ প্রায়ই তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করত।

অপর একটি সূত্র জানায়, মফিজের স্ত্রীর উপর পারভেজের চোখ পড়ে। বিষয়টি মফিজ টের পেয়ে তার স্ত্রী রুপাকে শাসন করায় পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এর জেরেই তিনি মফিজকে হত্যা করার পরিকল্পনা নেন।

মফিজের স্ত্রী রুপা বেগম বলেন, বীরতারা গ্রামের তৈয়ব আলী ফকিরের ছেলে পারভেজের সাথে আমার স্বামী রাজমিস্ত্রী কাজ করেন। সেই সুবাদে পারভেজ প্রায়ই আমাদের বাড়িতে আসতেন।

তিনি বলেন, শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি ফোন করে আমার স্বামীকে বড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় মফিজ আমাকে বলে যান যে পারভেজ ভাইয়ের সাথে আমি এক যায়গায় পাওনা টাকা আনতে যাচ্ছি। পরে রাত ৯টার দিকে আমি তাকে ফোন দিয়ে তার ফোন বন্ধ পাই। তখন আমার বাবাকে পারভেজের বাড়িতে পাঠাই। তিনিসহ পারভেজ আমরা স্বামীকে খুঁজতে বাজারে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার স্বামী আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, রুপা আমাকে মাফ করে দিস, আমি মরে যাচ্ছি। পারলে আমাকে বাঁচা। কোথায় আছে জানতে চাইলে বলে ভুট্টা ক্ষেতের মাঝখানে। এটা বলেই ফোন রেখে দেন। বিষয়টি আমি আমার বাবাকে ফোন করে জানানোর পর পরই পাবভেজ সিগারেট কেনার কথা বলে পলিয়ে যান। আমরা লোকজন নিয়ে মফিজকে খুঁজতে বের হই। অনেকগুলো ক্ষেতে খোঁজার পরে মোকলেস মেম্বারের বাড়ি বরাবর সালেপুর চকের একটি ক্ষেতে মফিজকে লাশের মতো পরে থাকতে দেখি। সবাই মিলে ধরাধরি করে তকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখানেও তার অবস্থা খারাপ ছিল। তাকে হাতুরি দিয়ে পিটানো হয়েছে। ছুরি দিয়ে আঘাত করার পর পারভেজ তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যান। আমার স্বামীর অবস্থা বেশি ভালো নয়। মাথায় ১২৬টি সেলাই পড়ছে। বাঁচবে কি না বলতে পারছি না। আমি পারভেজের বিচার চাই।

পরকীয়ার প্রশ্নে রুপা জানান, আমার স্বামীর তুলনায় পারভেজ কোন দিক দিয়ে ভালো যে তার সাথে সম্পর্ক হবে?

শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement