০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গজারিয়ায় হাতুড়ি পেটায় আহত, ৮ দিন পর সেই যুবকের মৃত্যু

- ছবি : সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সংগ্রাম, আতাউর ও সম্রাটসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরী করেছেন স্থানীয় আলী হোসেন মেম্বর। ওই গ্রুপের সন্ত্রাসীরা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত, পা ভেঙে ও মাথা থেতলে দেয় মীম নামে এক যুবককে। মীম চিকিৎসাধীন অবস্থায় আট দিন থাকার পর মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে মীমের মৃত্যু তার বাবা মো: আব্দুস সাত্তার নিশ্চিত করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হামলার পর গুরুতর আহত অবস্থায় আট দিন ধরে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে কোমায় ছিলেন তিনি। মীমের মৃত্যুর খবরে পরিবারে শোকের মাতম চলছে।

এ দিকে মীমের ওপর প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী মামলার পর থানায় মামলা হলেও এক সপ্তাহে একজন আসামিও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

থানা পুলিশের ভাষ্য, আসামি গ্রেফতারের ‘চেষ্টা চলছে’।

স্থানীয় সূত্র বলছে, গজারিয়ায় উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত দিন দিন বাড়ছে। এই কিশোর গাংদের নেতৃত্বে রয়েছেন ডা: তপন ও টিটু হাজী। স্থানীয়রা অস্ত্রের ভয়ে কোনো ঘটনারই মুখ খুলতে রাজি নয়।

তবে নাম প্রকাশ না করে অনেকে বলেছেন, আলী হোসেন মেম্বর, সংগ্রাম ও আতাউর মিলে এলাকায় ত্রাসের রাজ্য বানিয়েছে। আলম হত্যারও আসামিরাও ধরা ছোয়ার বাইরে। কারণ ডা: মাজহারুল ইসলাম তপন ও লিটন হাজীর তত্ত্বাবধানে চলে আলী হোসেন মেম্বর, সংগ্রাম ও আতাউর। এদেরকে মাসিক বেতন দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ উসকে দিচ্ছেন ডাক্তার তপন ও লিটু হাজী। এমনটিই অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় চেয়ারম্যান ও কয়েকজন মেম্বর।

আলী হোসেন মেম্বর, সংগ্রাম ও আতাউর এলাকায় মাদক, অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের কাছে ইসমানির চর এলাকার সকল লোকজন জিম্মি হয়ে আছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না কেউ।

মীম হত্যায় কারা জড়িত- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার বাবা মো: আব্দুস সাত্তার (৬০) জানান, ইসমানির চরের মো: সংগ্রাম মোল্লা (২৪) বাবা মৃত আ: বাছেদ মোল্লা, মো: আতাউর (২৭) বাবা মৃত আবুল হোসেন মুফতী, মো: সম্রাট (২২) বাবা মো: আহম্মদ আলী, মো: তুষায় (২০) বাবা আহম্মদ ফরাজী, মো: ছাব্বির (২২) বাবা মৃত আ: হাকিম, মো: নিজুম (২২) বাবা মৃত মহসিন, মো: অপু (২১) বাবা মৃত রাসেল। এ ছাড়া কলসের কান্দির মো: আরজু (২০) বাবা আ: রহিম, মো: শুভ (২০), বাবা আ: লতিফসহ ১০-১২ জনের কিশোর গ্যাং মিলে তার ছেলে সাজেদুল ইসলাম মীমকে হাতুড়ি, ডাসা, বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হাত, পা ও মাথা পিটিয়ে থেঁতলে দিয়েছে। আট দিন ধরে মীম ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি হয়ে আইসিউতে কোমায় ছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানা মামলা করা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করছে না বলেও অভিযোগ করেন মীমের বাবা আব্দুস সাত্তার।

তিনি আরো জানান, মো: সাজিদুল ইসলাম মীম (২২) ১০ সেপ্টেম্বর বনভোজনে যাওয়ার জন্য সংগ্রামের কাছ থেকে ঋণ করে ৪০০ টাকা জমা দেয়। ৪০০ টাকা জের ধরে ১৫ সেপ্টেম্বর ১টার দিকে নাজিরচর থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় ইসমানিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন এ্যাডভান্স প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনে পাকা রাস্তায় লোহার হাতুড়ি, কাঠের ডাসা, বাঁশের লাঠি দিয়ে হাত পা ভেঙে দেয় ও মাথা থেতলে দেয়।

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: রইছ উদ্দিন জানান, মীমের ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা সকলেই পলাতক রয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত আছে।


আরো সংবাদ



premium cement