রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অবশেষে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের মালিক সোহেল সিরাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন সোহেল সিরাজ। বিমানবন্দরে নামার পরই ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তাকে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে তুলে দেয়া হয়।
বেইলি রোডে আগুন লাগার পরই সোহেল সিরাজ দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হলো।
গতকাল বুধবার সিআইডি তাকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আসামির পক্ষে কাজী নজিবুল্যাহ হিরু রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতের সোহেল সিরাজের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কাচ্চি ভাই মালিককে গ্রেফতারের বিষয় নিশ্চিত করে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সোহেল সিরাজকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের আটতলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট। এ ছাড়া ভবনটির অন্য তলাগুলোতেও ছিল বেশ ক’টি খাবারের দোকান। ওই আগুনে ভবনে থাকা ৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। জীবিত উদ্ধার হয়েছে ৭৫ জন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজন। নিহতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৮ জন শিশু ছিল।
এ ঘটনায় অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে রমনা থানায় মামলা করে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।
এর আগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার জিসান, চা চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক ও শাকিল আহমেদ রিমন এবং গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ম্যানেজার হামিমুল হক বিপুলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের মালিক সোহেল সিরাজকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল সাতজনে।
অগ্নিকাণ্ডের পর ভবনটি পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্তে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হিসেবে সম্ভাব্য একাধিক কারণ উল্লেখ করে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা। এ ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত শেষে সংস্থাটি বলছে, ভবনটির নিচতলার চুমুক নামের চা-কফির দোকানের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ ছাড়া ভবনে গ্যাস জমে থাকায় সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা