২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আরি দং বৃত্তান্ত

-

আজ তোমরা জানবে আরি দং সম্পর্কে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে বিভিন্ন খাদ্যশস্য বিশেষত ধানের ওজন মাপা হয় ‘আরি দং’ দিয়ে। এক আরি দংপূর্ণ ধানকে বলা হয় এক আরি ধান। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
জানো, ওজন মাপার জন্য এ কালে অনেক ধরনের আধুনিক যন্ত্র বেরিয়েছে? এখনো গ্রামে দাঁড়িপাল্লাই ওজন মাপার প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি উপজাতিদের অনেকের কাছেই সে দাঁড়িপাল্লাটাও যেন অচেনা। তারা বিভিন্ন খাদ্যশস্য বিশেষত ধানের ওজন মাপেন ‘আরি দং’ দিয়ে। এক আরি দংপূর্ণ ধানকে তারা বলেন এক আরি ধান। আরি দংয়ের আকার অনুযায়ী এক আরি ধান ১০ থেকে ১৬ কেজির সমান হয়। অতীতে ১৬ কেজি আরির প্রচলনই বেশি ছিল। এখন ১২ কেজি আরির চল বেশি। আদিকালে তো বটেই, এখনো উপজাতিদের কাছে জুমের ধান মাপার এটাই একমাত্র ও প্রধান উপকরণ। তারা যখন জুমে বীজ বুনতে যান, তখনো এতে করে মেপে বীজ বোনেন। আগে এক আরি বীজ বুনলে জুম থেকে ১০০ থেকে ১১০ আরি ধান পাওয়া যেত, এখন পাওয়া যায় ৬০ থেকে ৭০ আরি ধান। আরির মাপ যেমনই হোক না কেন বীজ বোনা ও উৎপাদনের আনুপাতিক হিসাবটা তাদের কাছে এ রকমই সরল।
মারমা ভাষায় ‘আরি দং’ আর চাকমা ভাষায় ‘আঁরি’ হতে পারে হাঁড়ি শব্দের অপভ্রংশ। কেননা আরি দং দেখতে হুবহু হাঁড়ির মতো না হলেও অনেকটা তেমনই এক পাত্র বিশেষ। এক খণ্ড বড় গাছের গুঁড়ি খোদাই করে ডোলা বা হাঁড়ি সদৃশ একটা পাত্র তৈরি করা হয়। তলাটা সমান, গোলাকার মুখ। পাত্রটির দু’পাশে দু’টুকরো কাঠ লাগানো থাকে ধরার জন্য। সব সময় আরি দং কাজে লাগে না। তাই অন্য সময় একে অন্য কাজেও ব্যবহার করা হয়। এমনকি এর ভেতরে খড়কুটো দিয়ে মুরগিকেও উমে বসানো হয়। এখনো পাহাড়ি উপজাতিরা আরি দংয়ের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement