২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্র্টিং অ্যাক্ট ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে প্রভাব’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

-

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট ২০১৫ : ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের প্রভাব’ শীর্ষক ওয়েবিনার গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। এ ওয়েবিনারে বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মোসলেম চৌধুরী প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব-উল ইসলাম, সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, মানসম্মত অডিট রিপোর্ট প্রস্তুতকরণ ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেটি দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ চিহ্নিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের পুঁজিবাজারে এখনো কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি, এ ছাড়াও দেশের জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান সারা পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম, এ অবস্থা উন্নয়নে লিস্টেট ও নন-লিস্টেট কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড’-এর আওতায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হয় এবং ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মোসলেম চৌধুরী বলেন, আমাদের ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয়াদির পাশাপাশি জনস্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও বিবেচনা করে থাকে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ কাউন্সিলের কার্যক্রম আরো সম্প্রসারণ ও দৃশ্যমান করার ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইআরএফএস) অনুসরণের ক্ষেত্রে আমাদের আবশ্যই নিজেদের সক্ষমতাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং আমাদের এসএমই খাত এখনই আইআরএফএসের গাইড লাইন অনুসরণের জন্য প্রস্তুত হতে পারেনি, তাই এ বিষয়টি নিয়ে সবারই যতœবান হতে হবে। তিনি ফিন্যান্সিয়াল কাউন্সিল এবং এ খাতে প্রফেশনালদের মধ্যে সমন্বয় আরো বাড়ানোর প্রয়োজন।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব-উল ইসলাম, এফসিএ বলেন, ক্যামেল রেটিংয়ের মতো অডিট কোম্পানিগুলোর জন্য এফআরসি কর্তৃক রেটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পারে, যার মাধ্যমে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, অবস্থান এবং সক্ষমতা সম্পর্কে আমরা ধারণা পেতে পারি। এ ছাড়াও তিনি অডিট রিপোর্টের বিশ^াসযোগ্যতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের ‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট মনিটরিং ডিভিশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ, এফসিএ, এসিএ। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক কার্যক্রমের তিনটি বিষয় যেমন : আর্থিক তথ্য বিবরণী, অডিট প্রসেস এবং স্বচ্ছতা নিরূপণ ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্টের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, মানসম্মত ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্ট একটি ব্যাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য করে তোলার পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ^াস বৃদ্ধি এবং দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তিনি অডিট রিপোর্ট প্রস্তুতকরণে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের স্ট্যান্ডার্ড সেটিং ডিভিশনের নির্বাহী পরিচালক এম আনোয়ারুল করিম, এফসিএ, সিপিএ, যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. জাভেদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার এ এম মাসুম, দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক, এফসিএ এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন আকন, এফসিএমএ যোগদান করেন।
এ ছাড়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জোয়ারদার, এফসিএ, ওমেরা ফুয়েলস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আকতার হোসেন, এফসিএ, নর্থসাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের ফ্যাকালটি সদস্য প্রফেসর ড. শরীফ আহকাম প্রমুখ মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচকবৃন্দ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দের মানসিকতা পরিবর্তন, অডিট ফি বাড়ানো এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষ অডিট কর্মকর্তা নিয়োগদানের ওপর জোরারোপ করেন। বিজ্ঞপ্তি।

 


আরো সংবাদ



premium cement