করোনা সতর্কতায় এবার হোম কোয়ারেন্টিনে গেলেন সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ ও অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম। ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, ছেলেকে নিয়ে ৩ এপ্রিল যাওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস শহরে। কিন্তু করোনা সতর্কতায় তিনি এখন আছেন গ্রামের বাড়ি শ্রীনগরে হোম কোয়ারেন্টিনে।
তিনি জানান, গতকাল ছিল তার জন্মদিন। অন্য সময় বিশেষ এই দিনে অনেক আনন্দ করলেও এবার সরকারের নির্দেশ মেনে ঘরের ভেতরেই থাকছেন তিনি। শিল্পী জানান, অন্য বছর এ দিনে পাড়ার মানুষেরা রাতে জমায়েত হতেন তার বাড়িতে। রাতে এক সাথে নৈশভোজ করতেন সবাই। এবার কাউকেই ডাকেননি। এমনকি স্ত্রী-ছেলের সাথেও দেখা হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তিনি ঢাকায় যাওয়ার কথা ভাবেননি, পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়ম মানতে গিয়ে গ্রামে আসতে পারেননি।
ফেরদৌস ওয়াহিদের এখন গ্রামেই ভালো লাগে। শহরের পাট একপ্রকার চুকিয়েই ফেলেছেন। ঢাকায় গেলে ছেলে মিউজিশিয়ান হাবিব ওয়াহিদের বাসাতেই ওঠেন। গান-বাজনা যেটুকু করার গ্রামে থেকেই করেন। আর অনুষ্ঠান থাকলে তখন যেতে হয়।
করোনা নিয়ে ফেরদৌস ওয়াহিদ তার নতুন এক উপলব্ধির কথা জানিয়ে বলেন, ‘১৯৮৬, ’৮৭, ’৮৮ সালে আমি নিয়মিত ইতেকাফ করেছি। এখন আমার মনে হলো, কোয়ারেন্টিন একরকমের ইতেকাফই তো! নিজের সম্পর্কে আমরা নতুন উপলব্ধির মুখোমুখি হই ইতেকাফে। নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারি।’
জন্মদিনে ফেরদৌস ওয়াহিদের ভেতর নতুন কোনো অনুভূতির জন্ম হয়েছে কি না, জানতে চাইলে শিল্পী বলেন, ‘মৃত্যুর ভাবনাটা খুব হয়েছে। আজকাল এটা খুব হয়। বয়স হচ্ছে। যত দূর ভালো থাকার চেষ্টা করি।’ ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, গ্রামে এলেই তার ভাবনার আকাশ খুলে যায়। এখন এখানে নিজেকে অনেক সময় দেন। এর মধ্যেও শহরের আড্ডাটা মিস করেন।
এ দিকে করোনাভাইরাস নিয়ে প্রথম থেকেই সতর্ক অবস্থানে আছেন অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম। ২২ মার্চ থেকে শুটিং বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। তার আগে থেকেই সতর্ক এই অভিনেতা বন্ধ করে দিয়েছেন সব শুটিং। শুটিং বন্ধের পর থেকেই বাসায় থেকেছেন তিনি। এই সময়ে বাসায় অবস্থান করলেও পরিবারের জন্য বাজার করতে কিংবা প্রয়োজনীয় কাজে স্বল্প পরিসরে বাইরে বের হতে হয়েছে তাকে। তবে এখন থেকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন শহীদুজ্জামান সেলিম।
তিনি জানান, সময়ে সতর্কতার সাথে পরিবারের সাথে থাকা প্রয়োজন। কারণ, সবাই করোনা নিয়ে সতর্কতার পাশাপাশি আতঙ্কেও আছে। আমি চাই আতঙ্কিত না হয়ে পরিবারের সবাই সচেতন হলেই এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে সচেষ্ট হবো।
শহীদুজ্জামান জানান, প্রতিদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে, সেগুলো নিয়ম করে মেনে চলছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে সতর্ক থাকি, তাহলে এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারব। আমাদের সবার দেশকে নিয়ে ভাবতে হবে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের পাশাপাশি সবাইকে এই মুহূর্তে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নইলে এই সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন।’
অভিনয়শিল্পী সঙ্ঘের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন শহীদুজ্জামান। এখন বাসা থেকেই ভিডিও কনফারেন্সে সাংগঠনিক সব মিটিং করছেন বলে জানান তিনি। শহীদুজ্জামান বলেন, ‘বই পড়ার অভ্যাস অনেক দিনের। বইমেলা থেকে অনেক বই কিনেছিলাম, সেগুলো এখন পড়ছি। বাসায় নিজে ও পরিবারকে সময় দিচ্ছি।’