লালন সাঁইজির ভাববাণী ও জীবন দর্শন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আগস্ট মাস শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে গতকাল ‘বাউলের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাধুমেলার পঞ্চম আসর অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেলে সব পর্যায়ের বাউল সাধক, বাউল শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ২০১৯ সাল থেকে পূর্ণিমা তিথিতে নিয়মিত ‘সাধুমেলা’র আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের মহান শহীদের নিয়ে লেখা ১০টি গান ও লালন সাঁইজির ১০টি ভাববাণী নিয়ে সাধুমেলার এ আসর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
একাডেমি প্রাঙ্গণে পরিপূর্ণ দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। বিশেষ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান। বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট ও গবেষক মোনায়েম সরকার। সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, একাডেমির সচিব মো: বদরুল আনম ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে লালন সাঁইজির তত্ত্ব ও দর্শন সম্পর্কে আলোচনায় অংশ নেন লালন গবেষক ড. আবু ইসহাক হোসেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা গান ও সাঁইজির ভাববাণী পরিবেশন করেন বাউল শফি মন্ডল, টুন টুন ফকির, আবদুল লতিফ শাহ, সমির বাউল, দিতি সরকার ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বাউল দল।
‘হ্যামলেট’ : শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে গতকাল সন্ধ্যায় ‘হ্যামলেট’ নাটকের ১৩তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত উইলিয়াম শেকসপিয়রের হ্যামলেট নাটকটি অনুবাদ করেন সৈয়দ শামসুল হক। নির্দেশনা দিয়েছেন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান এবং প্রযোজনা উপদেষ্টা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
বাতিঘরের দুই নাটক মঞ্চস্থ : বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে মঞ্চস্থ হলো বাতিঘরের দুই নাটক ‘র্যাডক্লিফ লাইন’ ও ‘হিমুর কল্পিত ডায়েরি’। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ‘র্যাডক্লিফ লাইন’। এটি লিখেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন মুক্তনীল। রাত ৮টায় একই মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ‘হিমুর কল্পিত ডায়েরি’। এ নাটকও লিখেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন মুক্তনীল।
একই মঞ্চে পরপর দু’টি নাটক হলেও দুই নাটকের বিষয়, গল্প একেবারেই আলাদা। ‘র্যাডক্লিফ লাইন’ নাটকের গল্পে তুলে ধরা হয়েছে মিথ্যা অহমিকা আর ভোগদখলের জন্য আদিম যুগ থেকে জাতিতে জাতিতে চলে আসা পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। মিথ্যা অহমিকা আর ভোগদখলের জন্য আদিম যুগ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত জাতিতে জাতিতে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এই মিথ্যা অহমিকায় সৃষ্ট সিস্টেমের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে মানবতা আর বলির পাঁঠা হচ্ছে মানুষ নিজেই। ‘র্যাডক্লিফ লাইন’ নাটকটি যেন সিস্টেমের খাঁচায় বন্দী মানুষের ভেতরের মানবিকতাকে একটি বড় ঝাঁকি মেরেছে এবং স্পর্শ করেছে হৃদয়কে। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন খালিদ হাসান, স্মরণ বিশ্বাস, শিশির সরকার ও সঞ্জয় হালদার।
অন্য দিকে ‘হিমুর কল্পিত ডায়েরি’ নাটকের গল্পের প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক পোশাক শ্রমিক নিহত হন। হিমুর মতো যারা স্বেচ্ছাসেবক, তারা ১৫ দিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মানসিক সুস্থতার কোনো দায়ভার রাষ্ট্র নেয়নি। এ নাটকে সেই কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। রানা প্লাজা ধসের স্বেচ্ছাসেবক নওশাদ হাসান হিমু একপর্যায়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন। হয়তো বিচার না হওয়ার ক্ষোভ ছিল তার, তাই তাজরীনের আগুনের মতো, নিমতলীর মতো, নুসরাতের আগুনের মতো মৃত্যু বেছে নেন তিনি। এমন কথাই বলা হয়েছে নাটকটিতে।
‘হিমুর কল্পিত ডায়েরি’ নাটকে একক অভিনয় করছেন সাদ্দাম রহমান। সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন মুহিয়ান অঞ্জন, আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন তানজিল আহমেদ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা