২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চাঁদাবাজির মামলায় আওয়ামী লীগ কর্মী কারাগারে, থানা ঘেরাও

-

চাঁদাবাজি ও মারধরের মামলায় রিপন মাঝি নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে বরিশাল নগরের বিমানবন্দর থানা ঘেরাও ও বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। ওই কর্মীকে ছাড়া না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও দিয়েছেন তারা। তবে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রিপনকে গ্রেফতারের খবরে সোমবার দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নগরের কাশিপুর এলাকায় বিমানবন্দর থানার সামনে জড়ো হন। এ সময় তারা থানার প্রবেশ পথে আটক আওয়ামী লীগ কর্মী রিপনের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। দীর্ঘ ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ শেষে রিপনকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।

এরপর নেতাকর্মীরা নগরের সদর রোডের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় চত্বরে গিয়ে একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু সাংবাদিকদের বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের মিথ্যা অভিযোগে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত তার মুক্তির দাবি করেন তিনি। বিকেল ৫টার মধ্যে তার মুক্তি দেয়া না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন আওয়ামী লীগ নেতা বাবু।

এ বিষয়ে বরিশাল নগরীর বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, মামলার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দও করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি পুলিশের রুটিন কাজ। এখানে অন্য কোনো বিষয় নেই বলে দাবি করেন তিনি।

আর যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার জন্য কিছু লোক থানার সামনে জড়ো হয়েছিল। তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান ওসি কমলেশ।

এদিকে গ্রেফতার রিপনকে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ মার্চ নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাসদ জেলা শাখার সদস্য গোলাম রসুল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে অবৈধভাবে চাঁদাবাজির অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এর মধ্যে ১ নম্বর আসামি রিপনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে মহানগর আওয়ামী লীগ। ওই মামলার দুই নম্বর আসামি রাফসানের বাবা জসিম উদ্দিন ২৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা: মনীষা চক্রবর্তী বলেন, কাশিপুরে নিরীহ অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করতো একটি চক্র। এ ঘটনা সরেজমিনে গিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। আর সেই প্রতিবাদ করায় আমাদের নেতাকর্মীরা হামলার শিকারও হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছিল।

চলতি বছরের গত ২০ জানুয়ারি নারী শ্রমিককে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে নগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ কর্মী ও শ্রমিক নেতা সোহাগকে আটক করেছিল কাউনিয়া থানা পুলিশ। তখনো আওয়ামী লীগ নেতা ও শ্রমিকরা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। পরে সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়।

এদিকে রোববার (১৬ মে) বরিশাল নগরের পুলিশ লাইন রোডের শাড়ি ও পোশাকের দোকান বরিশাল ফ্যাশন হাউস এবং একই ভবনের কিচেন চাইনিজ রেস্তোরাঁর তালা ভেঙে আসামিরা যাবতীয় মালামাল ও নগদ টাকাসহ প্রায় ২৫ থেকে ২৭ লাখ টাকার মালামাল লুটের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় বরিশাল নগরের আমবাগানের জব্বার মিয়ার গলি এলাকার বাসিন্দা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধাক্ষ্য মো: তৌহিদুল ইসলাম, একই এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ, লিটু ও কাজী জুয়েলকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে।


আরো সংবাদ



premium cement