১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


জামালপুরে লাইসেন্সবিহীন পাঁচ শতাধিক করাতকল

নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই অবৈধ করাত কলগুলোর
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জামালপুরের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল : নয়া দিগন্ত -

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জামালপুরের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়কের পাশে এবং ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব অবৈধ করাতকলে নির্বিচারে চেরাই করা হচ্ছে নানা প্রজাতির গাছ। এতে একদিকে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে জলবায়ু, অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।
জানা গেছে, এসব মিলের কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স না থাকায় সরকারও বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা এসব করাত কলের মালিকের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে না কোনো আইনগত পদক্ষেপ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বনবিভাগের নীতিমালা (সংরক্ষিত আইন) অমান্য করে জামালপুরে গড়ে ওঠেছে পাঁচ শতাধিক অবৈধ করাতকল। এর মধ্যে মাত্র তিনটি করাত কলের লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ওইসব করাত কলের মালিকের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নিয়ে থাকেন।
করাতকলের কারণে নীরব পল্লী অঞ্চলেও শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছে পরিবেশ। সেই সাথে কাঠের গুঁড়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে জনসাধারণ। সড়কের পাশে গড়ে ওঠা বেশির ভাগ করাতকলের জন্য বহন করে নিয়ে আসা গাছের গুঁড়ি লোড-আনলোডিংয়ের সময় যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কের পাশে ফেলে রাখা হচ্ছে বড় বড় গাছের গুঁড়ি। এতে দুর্ঘটনায় পড়ছে অনেক যানবাহন।
জেলার একাধিক করাতকল মালিক জানান, উপজেলা পর্যায়ে করাতকল তদরকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। তারা বলেন, বৈধ কোনো অনুমোদন না থাকলেও সরকারের নিষিদ্ধ কোনো গাছ এখানে কাটা হয় না। তবে করাতকলের অনুমতিপত্র পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করে করাতকলের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। জামালপুর বনবিভাগ সূত্র জানায়, এ জেলায় সাড়ে চার’শ করাত কল রয়েছে। এসব করাত কলের মধ্যে জেলা সদরের তিনটি করাত কলের লাইসেন্স রয়েছে। আর ৯টি করাতকল লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে।
জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বনবিভাগের রেঞ্জ সহকারী জিয়াউল হক জানান, ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা এখনো জামালপুরে যোগদান করেননি। তিন আরো বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পেলে বনবিভাগের লাইসেন্স দেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।
এ ব্যাপারে জামালপুর পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সুকুমার সাহা বলেন, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়ক-মহাসড়ক এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা করাত কলগুলো পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। তিনি আরো বলেন, সব নিয়মনীতি বহির্ভূতভাবেই গড়ে ওঠেছে এসব করাতকল। এরা অবাধে কাঠ চিড়াই করায় উজাড় হচ্ছে বন। পরিবেশ অধিদফতরের উচিত এসব অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। তিনি অবশ্য বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই। তাই জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হয়। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসনের সহায়তায় অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement