২০ মে ২০২৪, ০৬ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫
`


এক নারীতে ধরাশায়ী ৪ আ’লীগ নেতা

তালতলীর ৩ চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা

-


এক নারীতে ধরাশায়ী চার আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে এবার আদালতে গণধর্ষণ মামলা হয়েছে। বুধবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে এ মামলাটি দায়ের করে। আদালতের বিচারক মশিউর রহমান খাঁন মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্তপূর্বক সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন। তিন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এ মামলা হওয়ায় জেলার সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, বরগুনার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সাথে মামলার বাদির কন্যার মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। একপর্যায় চেয়ারম্যান বাচ্চু মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে। ধর্ষিতা বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করবে বলে স্ট্যাম্পে লিখিত দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষিতার অজান্তে গোপনে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মামলার ২নং আসামি পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। চেয়ারম্যান রাজ্জাক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং সেও একইভাবে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে রাখে। পরে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আ: রাজ্জাক মেয়েকে ব্ল্যাক মেইল করে এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করে। তার কথা না শুনলে তাকে জীবননাশের হুমকি দেন। নিরুপায় হয়ে ধর্ষিতা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সাথেও দৈহিক সম্পর্কে বাধ্য হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও ভিকটিমকে বিভিন্ন হোটেল ও লঞ্চে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে দাবি করেন মামলার বাদি।

তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। এমন খবর পেয়ে তিন চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিলে ওই ধর্ষিতার বিরুদ্ধে উল্টো পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেয়। মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে ওই মামলায় ধর্ষিতা জেলহাজতে রয়েছে।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনার সাথে আমি ও অন্য দুই চেয়ারম্যানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এ বিষয়ে এ মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী আনিচুর রহমান মিলন বলেন, বরগুনা আদালতের বিচারক আমার বাদির মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement