২০ মে ২০২৪, ০৬ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫
`


শার্শার সাতমাইল পশুর হাটে খাজনা আদায়ে দুর্নীতির অভিযোগ

-

- কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
- প্রতিটি পশু থেকে ১৫০ টাকা খাজনা আদায়ের নিয়ম থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা

যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ার সাতমাইল পশুর হাটে খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু অবৈধভাবে ক্ষমতার জোরে পশুর হাট থেকে লাখ লাখ টাকা খাজনা আদায় করেন এবং নামমাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেন।
সূত্র জানায়, দক্ষিণবঙ্গের সব থেকে বড় শার্শার সাতমাইল পশুর হাট। এখানে প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল বেচাকেনা হয় হাটে।
জানা যায়, বিগত ১৩২৮ বঙ্গাব্দে সাতমাইল পশুর হাটের ইজারা ডাক ছিল সাড়ে আট কোটি টাকা। ১৩২৯ বঙ্গাব্দে ডাক ছিল সাড়ে ১৪ কোটি টাকা এবং ১৩৩০ বঙ্গাব্দে এই হাটের ডাক ছিল সাড়ে ১০ কোটি টাকা। তবে এবারের ১৩৩১ বঙ্গাব্দে এই হাটের কোনো ডাক বা ইজারা হয়নি। যে কারণে পূর্বের ইজারাদাররা সরকারি আইন অমান্য করে হাটের খাজনা আদায় করে যাচ্ছেন।

নতুন বছর ১৩৩১ বঙ্গাব্দে সাতমাইল পশুর হাটের কোনো ডাক বা ইজারা না হওয়ায় শার্শা উপজেলা প্রশাসন হাটের খাজনা আদায়ের জন্য বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাগআঁচড়া ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, শার্শা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, বাগআঁচড়া ইউপি সদস্য আবু তালেব, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আসমা আক্তার, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও শার্শার সহকারী কমিশনার (ভূমি)।
সূত্র জানায়, হাটের মেয়াদ গত চৈত্র মাসে শেষ হলেও উপজেলা প্রশাসনের দেয়া কমিটি আজো হাটের খাজনা আদায় করতে পারেনি। যে কারণে পূর্বের ইজারাদার কমিটিই খাজনা আদায় করে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, হাটে বিক্রির জন্য প্রতিটি পশু থেকে ১৫০ টাকা খাজনা আদায়ের নিয়ম থাকলেও তারা পশুর শ্রেণিভেদে ৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা করে আদায় করছেন। এ ছাড়া হাটের তিন হাজার ব্যবসায়ীর প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০০০ টাকা আদায় করে নিয়েছেন।

এসব অনিয়ম দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে শার্শা পশুর হাট থেকে প্রতি হাটে ১২-১৫ লাখ টাকা আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে তারা জমা দিচ্ছেন মাত্র দুই লাখ টাকা।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল বলেন, সাতমাইল পশুর হাট সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংক বলেন, এ বছর সাতমাইল পশুর হাট ইজারা হয়নি। আমরা শার্শা উপজেলা প্রশাসনকে হাটের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে কিছুটা সহযোগিতা করি মাত্র।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশী জানান, জনবলের অভাবে সরকারিভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খাজনা আদায় করা সম্ভব নয়। হাটে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement