সোনারগাঁওয়ে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ভিড়

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে পর্যটন ও বিনোদন স্পটগুলো ঈদুল ফিতরের ছুটি এবং বর্ষবরণ কেন্দ্র করে ভ্রমণপিপাসুদের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে। দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে সোনারগাঁওয়ে। ঈদ ও বর্ষবরণের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সোনারগাঁওয়ের পর্যটন ও বিনোদন স্পটগুলোতে ঈদের দিন থেকে টানা ৫ দিন দর্শনার্থীদের ঢল নামে। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকা থেকে আসা বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত ছিল বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁও জাদুঘর), পানাম নগরী, বাংলার তাজমহল ও পিরামিডসহ সোনারগাঁওয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো।

সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, বাংলার তাজমহল ও পিরামিড, ঐতিহাসিক পানাম নগরী, বারদীতে জ্যোতিবসুর জাদুঘর, বৈদ্যেরবাজার মেঘনা নদীর ঘাট, কাইকারটেক, অলিপুরা, হরিহরদি ব্রিজ এলাকা, দ্বিতীয় মেঘনা সেতুসহ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানে দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিণত হয়। এসব বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে বিভিন্ন বয়সী নারী, পুরুষ ও শিশুদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে সোনারগাঁও জাদুঘর, বাংলার তাজমহল ও পিরামিড এবং ঐতিহাসিক পানাম নগরীতে। দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়। দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।

এদিকে পানাম নগরী ও জাদুঘরসহ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের চাপে বিনোদন কেন্দ্রের আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের কারণে গাড়ি ছেড়ে হেঁটে দর্শনার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রে ছুটছে।
জানা যায়, এবার বছর ঈদের দিন থেকে শুরু করে টানা ৫ দিন ঈদের ছুটি ও বাংলা নববর্ষে প্রকৃতির কাছাকাছি কিছু সময় কাটানোর জন্য সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, বাংলার তাজমহল-পিরামিড ও পানামনগরীসহ সোনারগাঁওয়ের প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। সবচেয়ে বেশী পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের নির্মিত বাংলাদেশ লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, ঐতিহাসিক পানামনগরী ও সোনারগাঁওয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল পেরাব এলাকায় বাংলার তাজমহল ও পিরামিডে। সারা দেশ থেকে আসা হাজারো দর্শনার্থীর ভিড়ে প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রের সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় যানজট।
বাংলার তাজমহলের প্রতিষ্ঠাতা ও চিত্র পরিচালক আহসান উল্যাহ মনি জানান, প্রতি বছরই প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাংলার তাজমহলে ও পিরামিডে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় নামে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এবার ঈদ ও বাংলা নববর্ষে লোকজনের আগমন ছিল অনেক বেশি।

ট্যুরিস্ট পুলিশের নারায়ণগঞ্জের ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন জানান, ঈদ ও নববর্ষেও ছুটিতে এখানে এবার দর্শনার্থীদের ভিড় একটু বেশি থাকে। এবার দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক বিদেশী অতিথিও আসছেন। তাদের কারো যেন অসুবিধা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্যেও কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্মল প্রকৃতির সাথে কিছু সময় আনন্দে কাটিয়ে খুশি আগত দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ছিল লোকশিল্প জাদুঘর প্রাঙ্গণে। হাজারো পর্যটক সোনারগাঁয়ে এসে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা ঈদ ও নববর্ষের আনন্দোৎসবে মেতে উঠেন। আমেরিকা, জাপান ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা সোনারগাঁ জাদুঘর, পানাম সিটিসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে এসেছেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান জানান, এবার ঈদের ছুটি ও নববর্ষে ফাউন্ডেশনে পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষনীয়। পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা ছাড়া ফাউন্ডেশন চত্বরে এবার পক্ষকালব্যাপী বসেছে বৈশাখী মেলা। ঈদের ছুটিতে লোকজন বেড়াতে এসে বৈশাখী মেলাও উপভোগ করছেন।