২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অসময়ে মেঘনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

লালমোহনের একটি আড়তে সাজিয়ে রাখা ইলিশ; ইনসেটে জেলেদের জালে ধরা পড়া ইলিশের স্তূপ : নয়া দিগন্ত -

ভোলার লালমোহনের মেঘনা নদীতে অসময়ে ধরা পড়ছে প্রচুর রুপালি ইলিশ। এতে সয়লাব হয়ে উঠেছে উপজেলার হাটবাজার। ইলিশে জমজমাট মাছের আড়ৎগুলো। জেলে, আড়ৎদার ও পাইকারদের হাঁকডাকে শীতের পড়ন্ত বিকেলে এক অন্যরকমের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে উপজেলার মাছঘাটগুলোতে।

কিছুটা দেরিতে হলেও নদীতে মাছ ধরা পড়ায় হাসি ফুটে উঠেছে জেলেদের মুখে। মাছ বিক্রির টাকায় লোকসান পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশাবাদী তারা। জেলেরা জানান, এ বছর ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধন না করায় অবরোধের দুই মাসের মাথায় নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। অবরোধের আগে বা অন্যান্য বছর এ সময় নদীতে এত মাছের দেখা মেলেনি। কিন্তু দু’মাস ধরে নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। এমন কোনো জেলে নেই যে মোটামুটি ইলিশ না পাচ্ছেন। ইলিশ বিক্রির টাকায় মহাজনের দাদনের টাকাও অনেকে পরিশোধ করে ফেলেছেন। জেলে পল্লীগুলোতে আনন্দে মেতে উঠেছে পরিবারের সদস্যরা।

লালমোহনের বাত্তির খাল, কামারের খাল, সর্দারের খাল, শামপাটারির কাঠির মাথা, গাইট্টা, বুড়ির দোন, চাঁদমিয়ার হাট সংলগ্ন ঘাট ও বেতুয়া স্লুুইস ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।

মেঘনার বাত্তির খাল এলাকার জেলে জসিম ও শাহে আলম বলেন, গত কয়েক বছর সারাদিন জাল নিয়ে ছুটলেও প্রায়ই ফিরতে হতো খালি হাতে। কিছুদিন হলো বেশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এক খেও দিয়ে ১৫-২০ হাজার টাকার মাছ উঠছে। বুড়ির দোন এলাকার জেলে আব্দুর রহমান বলেন, চার দিনে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছি, মাছের আমদানি অনেক ভালো। এতে অনেক জেলেই দাদন শোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
বেতুয়া স্লুইস মাছঘাটের এক আড়ৎদার বলেন, নদীতে মাছ ধরা পড়ায় জেলে ও আড়ৎদাররা অনেক খুশি। দিন যত বাড়ছে মাছের আমদানি তত বাড়ছে। এখানকার মাছ স্থানীয় হাটবাজার ছাড়াও ঢাকা, বরিশাল ও চাঁদপুর পাঠানো হচ্ছে।

মাহে আমল নামের এক আড়ৎদার জানান, মাছ ধরা পড়ছে গত অবরোধে মা ইলিশ না ধরার কারণে। অবরোধ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলেন জেলেরা। কারণ মহাজনের দাদনের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিল না। কিন্তু আল্লাহপাক সব চিন্তা দূর করে দিয়েছেন। পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়েছে। এতে আশা করা যায় জেলেরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুছ বলেন, গত ইলিশের প্রজনন মৌসুমে অবরোধ সফল হওয়ায় একটু দেরিতে হলেও নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে। সুফল পেতে যাচ্ছেন জেলেরা।

তবে স্থানীয় ক্রেতারা ক্ষোভের সাথে বলেন, আমাদের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও আমরা জাটকা বা ছোট ইলিশ ছাড়া বড় কোনো ইলিশ কিনতে পাই না। স্থানীয় হাটবাজারে কিছু জাটকা ইলিশের দেখা মিললেও ও বড় বড় ইলিশ ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় ক্রেতাদের দাবি, জেলেরা, যেন স্থানীয়দের চাহিদার দিকেও একটু খেয়াল রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement